রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম তুষার হালদার। তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) সদ্য স্নাতক পাশ এক শিক্ষার্থী।
তার বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের তালগাছিয়া গ্রামে।
নিহত এ তুষারের বাবা দীনেশ হাওলাদার শুক্রবার (১ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে সন্তানের লাশ গ্রহণ করেন। তিনি দীনেশ হাওলাদারের একমাত্র পুত্র ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলামোটরের অফিস থেকে বের হয়ে বেইলি রোডে খাবার খেতে গিয়েছিলেন তুষার। আগুন লাগার কিছু আগমুহূর্তে বন্ধুদের সঙ্গে ওই রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন তিনি।
তুষার হাওলাদার রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। গতকাল রাত ১১টা থেকে খোঁজ মিলছিল না তার। আজ সকালে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে লাশ সনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা।
তুষারের সহপাঠীরা জানান, বাবা-মাকে কনভোকেশনে নেবার জন্য টাকাও জমা দিয়েছিল সে। সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করা তুষার সমাবর্তনের অপেক্ষায় ছিল। কখনো বাবা-মাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেনি। বাবা-মাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিল তুষার। কীভাবে ছবি তুলবে, ভিডিও করবে এ নিয়েও পরিকল্পনা করে সে। কনভোকেশনের দিন ছুটি নেবে বলেও জানায় বন্ধুদের। কিন্তু মুহূর্তেই সব কিছু শেষ।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়েছেন তুষার। লেখাপড়ার পাশাপাশি দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন পাক্ষিক অনন্যায়। পরে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভেও কাজ করেন।
গত মাসে সাংবাদিকতা ছেড়ে দিয়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন বলে জানা যায়। স্টারটেক নামে একটি আইটি কোম্পানিতে ভিডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তুষারের মা এখনো জানেন না তার ছেলের মৃত্যুর খবর। অসুস্থতার কারণে তাকে জানানো হয়নি যে, আর কখনো মা বলে ডাকবে না তুষার।
নিহত তুষারের চাচা সুমন হাওলাদার বলেন, তুষারের মা-বোন কেউ তার মৃত্যুর খবর জানে না। তুষারের মা অসুস্থ তাই তাকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি।
শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনে লাশ গ্রহণের সময় তুষারের বাবা দীনেশ চন্দ্র হাওলাদার জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
মন্তব্য করুন