মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মাঠে শুয়ে ছিল মেছো বিড়াল, উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত

মেছো বিড়াল। ছবি : কালবেলা
মাঠে শুয়ে ছিল মেছো বিড়াল, উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত

মাঠে জমি থেকে কিছুটা উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নেপিয়ার ঘাস। ঘাসের মধ্যে শুয়ে ছিল মেছো বিড়ালটি। জমিতে ইঞ্জিনচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে পানি দিচ্ছিলেন এক কৃষক। এ সময় প্রাণীটির ফোঁস ফোঁস শব্দ শুনে রীতিমতো ভয় পেয়ে যান তিনি। পরে অন্য কৃষকদের সহায়তায় কৌশলে তাকে আটক করা হয়।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সুন্দলপুর গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন মেছো বিড়ালটি উদ্ধার করে পাশের খানপুর বাগানে অবমুক্ত করে।

সুন্দলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ও কৃষক সাইদুর রহমান জানান, সুন্দলপুর মাঠে তার ৬ শতক জমিতে একটি নেপিয়ার ঘাসের ক্ষেত আছে। সকালে তিনি সেচযন্ত্র দিয়ে সেখানে পানি দিতে যান। তখন একটি মেছো বিড়াল শুয়ে ছিল। এ সময় শব্দ শুনে তিনি এগিয়ে গেলে প্রাণীটি তাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। তখন চিৎকার দিলে আশপাশের ১০-১২ জন কৃষক সেখানে দৌড়ে আসেন। অনেক চেষ্টা করে কৌশলে মেছো বিড়ালকে একটি বস্তার মধ্যে ঢুকানো হয় এবং একটি খাঁচায় রাখা হয়। পরে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে খবর দেওয়া হয়। দুপুরে তাদের সহায়তায় মেছো বিড়ালটিকে অবমুক্ত করা হয়।

মনিরামপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী সংরক্ষক এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, সকালে মেছো বিড়ালটি উদ্ধার করা হয়। নেপিয়ার ঘাসের খেতে শুয়ে ছিল প্রাণীটি। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন সেটি উদ্ধার করে খানপুর বাগানে অবমুক্ত করেন।

বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, মেছো বিড়ালকে (Fishing Cat) অনেক এলাকায় মেছোবাঘ নামেও ডাকে। কিন্তু এর প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল। অথচ বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না। বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

মেছো বিড়ালগুলো উদ্ধার করায় স্থানীয় জনতা ও পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১০

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১১

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৪

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৫

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৬

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৭

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

১৮

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

১৯

জেল খেটেছি তবু শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাইনি : সাবেক এমপি হাবিব

২০
X