চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ইমন হোসেন (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নে জনতাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবি, শুধু আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। যদিও পুলিশ বলছে, আধিপত্য বিস্তার নয়। বরং একটি অটোরিকশায় ওঠানামার ঘটনায় বাগ্বিতণ্ডা থেকে ইমন খুন হতে পারেন।
ইমন বাকিলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের লোধপাড়া কবিরাজ বাড়ির হারুনুর রশিদের ছেলে। তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজের পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে যমজ শিশুসহ মোট ৩ সন্তানের জনক।
ঘটনা প্রসঙ্গে লোধপাড়ার কবিরাজ বাড়ির শাহাদাৎ বলেন, দুদিন আগে এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ১নং ইউনিয়নের রাজারগাঁও ইউনিয়নের ছাত্রলীগ নেতা তারেক আজিজের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ৪নং কাঁলচো ইউনিয়নের সাকছি পাড়ার ছেলেদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। সেখানে ইমন মধ্যস্থতা করে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে তারেক গ্যাং এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।
নিহতের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, সন্ধ্যায় তারেক ৪-৫টি সিএনজি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে দলবলসহ জনতা বাজারে প্রবেশ করে। এরপরই তারা ইমনের ওপর হামলা চালায় এবং পিটিয়ে হত্যা করে বাজারের কাছেই একটি বাগানে ফেলে রেখে চলে যায়।
তার আরেক চাচা নুরুল আলম বলেন, এই জনতা বাজারে ইমন বার্নিসের কাজ করত। মাত্র ২০ দিন আগে ইমনের স্ত্রী যমজ সন্তানের জন্ম দেয়। এ ছাড়া তার আড়াই বছরের ছেলেসন্তানও রয়েছে। আমরা তারেকসহ ঘটনায় জড়িত সকলের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সৈয়দ আহমেদ কাজল বলেন, মাথায় ও শরীরে জখম অবস্থায় হাজীগঞ্জ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ইমন নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তবে তিনি আগেই মারা যায়।
হত্যাকাণ্ডের পর গা-ঢাকা দেওয়ায় অভিযোগ প্রসঙ্গে তারেক কিংবা তার বাহিনীর কারও কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রশীদ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আমরা অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে এসেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অটোরিকশা নিয়ে ইমনের সঙ্গে কথাকাটাকাটির জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে থানায় এসে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।