লালমনিরহাটে বর্ধিত সভা চলাকালে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সামনেই মঞ্চ থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে মন্ত্রীর এপিএস মিজানুর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে আদিতমারী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝেও হট্টগোল সৃষ্টি হয়। অনেকে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে বাইরে চলে যান। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সভা চলে।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ।
মারধরের শিকার নজরুল ইসলাম আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মঞ্চে মন্ত্রীর পেছনে বসেছিলাম। আকস্মিক মন্ত্রীর এপিএস মিজানুর রহমান কয়েকজন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মঞ্চ থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর ও হেনস্তা করতে থাকেন। মন্ত্রীর এপিএস মিজান নিজেই আমাকে মারধর করেছেন। তারা আমার গায়ের কোটটি ছিঁড়ে ফেলেছে। মন্ত্রীর এপিএস মিজানের সঙ্গে যেসব ছেলে আমাকে মারধর ও হেনস্তা করেছেন তাদের আমি চিনিও না। তাদের কোনোদিনই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে দেখিনি।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘লালমনিরহাট-২ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনের প্রত্যাশা জানিয়ে আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। এতেই চরম ক্ষিপ্ত হয়েছেন মন্ত্রীর এপিএস মিজান।’
বর্ধিত সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একাংশ জানান, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। যেখানে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আছেন এবং তিনি হলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। নজরুল ইসলাম এই আসন থেকে নির্বাচন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অপর অংশ বলছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণে সবার অধিকার আছে। নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তিনি একজন শিক্ষক। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রীর এপিএস মিজান এটা সহ্য করছেন না। মিজান তার অনুসারীদের নিয়ে একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে মারধর ও হেনস্তা করেছেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
তবে এ ঘটনায় সমাজকল্যাণমন্ত্রীর এপিএস ও আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, তিনি ঘটনার কোনো কিছুই জানেন না। তিনি কেন আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামকে মারধর ও হেনস্তা করতে যাবেন। হয়তো উপস্থিত কোনো নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম যে অভিযোগ তুলেছেন, তা সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট।’
আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্চে বসায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল দেখা দিয়েছিল। নজরুল ইসলাম মঞ্চ থেকে উঠে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। নজরুল ইসলামকে মারধর ও হেনস্তা করার ব্যাপারে তিনি অবগত নন।
মন্তব্য করুন