জয়পুরহাটের পাঁচবিবির বালিঘাটা ইউনিয়নের আটুল মধ্যপাড়া গ্রামের কৃষক লিটন তার বাড়িতে পালিত একটি রাজহাঁসের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। এ যেন মানুষ ও রাজহাঁসের অন্যরকম ভালোবাসা। কৃষক লিটন বাড়ি থেকে বের হয়ে মাঠে যাচ্ছিলেন, তখন মালিককে অনুস্মরণ করে পেছনে পেছনে যাচ্ছিল হাঁসটি। লিটন যেখানেই হেঁটে যান সেখানেই তার পেছনে পেছনে রাজহাঁসটিও চলে যায়। শুধু তাই নয় শত মানুষের ভিড়েও রাজহাঁসটি তার মালিক লিটন হোসেনকে খুঁজে নেন। মানুষ ও রাজহাঁসের এমন ভালোবাসা দেখতে এখন প্রতিদিনই লোকজন লিটন হোসেনের বাড়িতে আসছেন। মানুষ ও রাজহাঁসের এমন সখ্যতা দেখে প্রতিবেশীসহ মুগ্ধ সবাই।
আটুল মধ্যপাড়াগ্রামে লিটন হোসেন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ির সামনে কয়েকজন মানুষ জড়ো হয়েছেন। লিটন হোসেন বাড়ির দরজা খুলে বাইরে আসেন। কিছুক্ষণ পর একটি রাজহাঁস বাড়ি থেকে বের হয়। লিটন হোসেন মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন। রাজহাঁসটিও তাকে অনুসরণ করে পেছনে পেছনে যাচ্ছিল। তিনি যখন মাঠ থেকে বাড়িতে ফিরেছিলেন। রাজহাঁসটিও আবার পেছনে পেছনে আসছিল। উৎসুক লোকজন এমন দৃশ্য দেখছিলেন। লিটন হোসেন আবার যখন বাজারের দিকে রওনা হন। রাজহাঁসটিও তাকে অনুসরণ করে পেছনে পেছনে যাচ্ছিল। একজন ব্যক্তি পরীক্ষা করতে রাজহাঁসটি খাবার দিয়ে তার দিকে ডাকছিলেন। কিন্তু রাজহাঁসটি তার মালিক লিটন হোসেন দিকেই ছুটে চলেছে।
আটুল গ্রামের কৃষক লিটন হোসেন বলেন, এক বছর আগে ১২০০ টাকায় এক প্রতিবেশীর কাছে ৪টি রাজহাঁসের বাচ্চা কিনেছিলাম। একটি বাচ্চা মারা গেছে। একটি বনবিড়ালে খেয়েছে। দুটি রাজহাঁসের মধ্যে আমরা একটি জবাই করেছি। অবশিষ্ট রাজহাঁসটি নিয়মিত খাবার দিচ্ছিলাম। সেখান থেকে আমার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। বিগত ছয় মাস ধরে যেখানে যাই রাজহাঁসটিও আমার পেছনে পেছনে আসে। অনেক চেষ্টা করেও রাজহাঁসটিকে আমার পিছু ছাড়াতে পারিনি। যখন বাজারে যাই, আমার পেছনে পেছনে রাজহাঁস চলে আসে। এ কারণে রাজহাঁসের মায়ায় পড়েছি। রাজহাঁসটি কয়েকবার জবাই করে খাওয়ার উদ্যোগ নিয়েও জবাই করতে পারিনি। এখন ভাবছি রাজহাঁসটিকে কাছেই রেখে দিব। এখন প্রতিদিন রাজহাঁসটিকে দেখতে লোকজন আমার বাড়িতে আসছে।
লিটন হোসেন বলেন, যখন দূরে কোথাও যাই, তখন রাজহাঁসটিকে বেঁধে রাখি। বাড়িতে আসার পর আমার কথা শোনার পর রাজহাঁসও সাড়া দেয়।
লিটন হোসেনের স্ত্রী ছোবেদা খাতুন বলেন, আমরা পরিবারের সবাই রাজহাঁসটিকে খাবার দিই। কিন্তু রাজহাঁসটি আমাদের কাছে আসে না। আমার স্বামী যেখানে যায় রাজহাঁসটিও পেছনে পেছনে চলে যায়। এতে সাংসারিক কাজের কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। তারপরও রাজহাঁসের এমন ব্যবহারে আমরা সবাই মুগ্ধ।
মন্তব্য করুন