অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশু মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়ার মা-বাবাকে ছাড়পত্র দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তাদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ইনচার্জ ডা. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘গত রোববার শিশুদের মায়ের শরীরে হালকা জ্বর ছিল। সোমবার তারা বেশ সুস্থ থাকায় তাদের হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তবে বাড়িতেও তাদের আপাতত আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। কারণ, আমরা বলছি বাচ্চা দুটি অজানা এক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কিন্তু অজানা সেই ভাইরাসটি আসলে কী সেটি কিন্তু এখন পর্যন্ত আইডেন্টিফাই করা সম্ভব হয়নি। ভাইরাস শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের পরিবারের লোকজন থেকে আলাদা থাকতে বলা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিন বলেন, ‘কিছু নমুনা আমরা রামেক হাসপাতালে যে ল্যাব রয়েছে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আবার কিছু ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সব নমুনার ফল আমরা এখনো হাতে পাইনি। সুতরাং কোন জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে শিশু দুটি মারা গেছে তা শনাক্ত করা যায়নি। আবার অধিকতর তদন্তের জন্য ঢাকার বিশেষজ্ঞ টিম দিনব্যাপী রামেক হাসপাতাল এবং ক্যাডেট কলেজ থেকে নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সবকিছু মিলেই আমরা আসলে চেষ্টা করছি কী কারণে শিশু দুটির মৃত্যু হয়েছে তা জানার।’
আগামী ২ মার্চ মুনতাহা মারিশার বয়স হতো দুই বছর। আর ৩০ মে পাঁচ বছর পূর্ণ হতো মুফতাউল মাশিয়ার বয়স। তাদের বাবার নাম মনজুর রহমান (৩৫)। তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিতের প্রভাষক। বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে স্ত্রী পলি খাতুন (৩০) ও দুই মেয়েকে নিয়ে চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন তিনি।
মারা যাওয়া দুই শিশুকে গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ক্যাডেট কলেজ ক্যাম্পাসের গাছতলা থেকে বরই কুড়িয়ে এনে খেতে দিয়েছিলেন গৃহকর্মী। বরইগুলো ধোয়া ছিল না। বরই খাওয়ার পর দিন বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ ছোট মারিশার গায়ে জ্বর আসে এবং বমি করতে থাকে। পরে ওই দিনই হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। এর দুদিন পর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মাশিয়ারও জ্বর ও বমি শুরু হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। পর দিন শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাশিয়াও মারা যায়।
মন্তব্য করুন