স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম তার বেয়াইকে (সংসদ সদস্যের ভাতিজির শ্বশুর) উপজেলা আওয়ামী লীগের ভুয়া উপদেষ্টা বানিয়ে মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া একটি ডিও লেটার (আধা সরকারিপত্র) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করলেও স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার জন্য মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সুপারিশ করেন ওই সংসদ সদস্য। ইউসুফ আলী ভূঁইয়া (সংসদ সদস্যের বেয়াই) উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য না হলেও সংসদ সদস্য তার ডিও লেটারে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য সুপারিশ করেন।
এরপর শুক্রবার (৯ জুন) রাজধানী ঢাকা থেকে ওই ডিও লেটার ফাঁস হয়। শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ খবর ভাইরাল হয় এবং ওই সংসদ সদস্যের সমালোচনা করে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ফেসবুকে পোস্ট দেন। সারা টাঙ্গাইলে আওয়ামী পরিবারে এ খবরটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে বলেন, ইউসুফ আলী ভূঁইয়া কোনোকালেও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য হওয়া তো দূরের কথা কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের সখীপুরে পুনর্গঠিত চারটি ইউনিয়ন পরিষদে আগামী ১৭ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে চারটি ইউনিয়নে ২৮ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে গণভবনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন পরিষদ মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নে ৯ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন। ইউসুফ আলী ভূঁইয়া তাদের একজন। উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য না হয়েও সংসদ সদস্য তার বেয়াইকে ডিও লেটারে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য উল্লেখ করে গত ৭ জুন মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সুপারিশ করেন। শুক্রবার দুপুর ৩টার দিকে ওই ডিও লেটার ফাঁস হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বড়চওনা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি ৪২ বছর ধরে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। অথচ সংসদ সদস্য শুধু বেয়াই হওয়ায় ইউসুফ আলী ভূঁইয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে মিথ্যা ডিও লেটার দিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হোক।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের বেয়াই ইউসুফ আলী ভূঁইয়া বলেন, সংসদ সদস্য আমাকে বলেছেন তিনি আমাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বানিয়েছেন। এখানে আমার কোনো দোষ নেই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার বলেন, তিনি কখনোই কোনোকালেও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন না। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়েছে। এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো উপদেষ্টা কমিটি গঠিতই হয়নি।
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ইউসুফ আলী ভূঁইয়াকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক উপদেষ্টা হিসেবে অস্বীকার করলে আমি তাকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বানাব। ডিও লেটারে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা লেখা এটা ‘মিসটেক’ হয়েছে।
আর্কাইভ 
| ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
