সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে সংসারের বোঝা মনে করে ফাতেমা খাতুন নামে বৃদ্ধ মাকে হত্যার দায়ে ছেলে ও ছেলে বউকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পেশকার আব্দুল মমিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১টার দিকে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক কানিজ ফাতিমা এ দণ্ডাদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, আসামিদের The Penal Code এর ৩০২/৩৪ ধারায় দণ্ডযোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো। হাইকোর্টকে নিশ্চিত করা সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে দণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কাজিপুর উপজেলার রেহাইশুরিবেড় গ্রামের মৃত মকছেদ আলী মন্ডলের ছেলে মো. আব্দুস সামাদ (৬৫) ও আব্দুস সামাদের স্ত্রী মোছা. রশিদা খাতুন (৬০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শামছুল আলম জানান, ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর সকালে রেহাইশুড়িবেড় গ্রামের আব্দুস সামাদের বাড়ি থেকে ফাতেমা খাতুনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে আব্দুর রহিম বাদী হয়ে অজ্ঞানামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে ছেলে আব্দুস সামাদ ও ছেলের বউ রশিদা খাতুন সংসারের বোঝা মনে করে ফাতেমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারই অংশ হিসেবে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে রশিদার পরামর্শে সামাদ তার মা ফাতেমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে পাশের একটি ঘরে নিয়ে যায়। তার মুখে পরনের কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে সামাদ পা ধরে রাখে এবং রশিদা বঁটি দা দিয়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করেন। নিহতের গোঙানির শব্দে তার নাতিবউ রুনা খাতুন জেগে উঠে তার গলাকাটা মৃতদেহ দেখতে পায়। তখন রশিদা ও সামাদ তাকে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. আব্দুর রহিম বাদী হয়ে প্রথমে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশী তদন্তে বেরিয়ে আসে নিহতের ছেলে ও ছেলে বউ গলাকেটে তাকে হত্যা করেছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। শুনানি শেষে বিচার আজ এ দণ্ড দেন।
মন্তব্য করুন