কুমিল্লার দেবিদ্বারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় মো. ছবির হোসেন (২৭) নামে এক যুবকের দুই হাত ও এক পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ছবির হোসেনের বড় ভাই সোহাগ মিয়া বাদী হয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে দেবিদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শুক্রবার (১০ ফ্রেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ বাজারে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ছবির হোসেন জাফরগঞ্জ ইউনিয়নে দক্ষিণ নারায়ণপুর গ্রামের মো. তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। বর্তমানে ছবির হোসেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদের পক্ষে কাজ করেন মো. ছবির হোসেন। তিনি পেশায় একজন সিএনজিচালক। নির্বাচনে নৌকার পরাজয়ের কারণে ছবিরকে হুমকি দিয়ে আসছিল সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের কর্মী সমর্থকরা। শুক্রবার রাত ১০টায় উপজেলার জাফরগঞ্জ কলেজগেট এলাকা থেকে ছবির হোসেনকে তার সিএনজিসহ তুলে নিয়ে যায় একদল সন্ত্রাসী। পরে তারা ছবির হোসেনের দুটি হাত ও একটি পা ভেঙে এবং মারধর করে গঙ্গমন্ডল এলাকার তিতু মিয়ার বাড়ির পাশে কবরস্থানের নিকট ফেলে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীরা ছবিরকে উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চিকিৎসাধীন ছবির হোসেন জানান, নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য আমাকে অনেক চাপ প্রয়োগ করেছে সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ও গঙ্গামন্ডল গ্রামের আওলাদ। নৌকার পরাজয়ের পরও আমাকে বিভিন্নভাবে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার রাতে কলেজগেটে আওলাদ, অপু, আক্তার, কামালসহ আরও কিছু লোক আমার সিএসজি থামিয়ে গলায় ছুরি ধরেন। পরে ওই জায়গা থেকে তারা জোরপূর্বক তুলে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে আমাকে অনেক মারধর করে এবং আমার হাত-পা ভেঙে একটি কবরস্থানের পাশে ফেলে আমার সিএনজি, মোবাইল ও সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আমি অনেক আকুতি মিনতি করে তাদের পা ধরেও রক্ষা পাইনি। শনিবার বিকেলে ছবির হোসেনের বড় ভাই সোহাগ মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আমার কোনো লোক জড়িত নয়। তাকে কে বা কারা মেরেছে আমি জানি না।
দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া জানান, হাত পা ভেঙে দেওয়ার একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত কাজ চলছে। ঘটনার সত্যতা পেলে মামলা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন