বগুড়ার শিবগঞ্জ থেকে মহাবিপন্ন প্রাণি শকুন উদ্ধার করেছে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পৌর এলাকার বগিলাগাড়ি মহল্লা থেকে শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
পরিবেশবাদী সংগঠন তীরের সাধারণ সম্পাদক হোসেন রহমান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি বগিলাগাড়িতে কিছু যুবক একটি শকুন আটক রেখেছে। পরে সেখান থেকে ৮ কেজি ওজনের শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
হোসেন রহমান আরও বলেন, ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ থাকায় সামাজিক বন বিভাগ বগুড়ার কাছে পাখিটিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করে পরবর্তী উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সামাজিক বন বিভাগ বগুড়ার উপবন সংরক্ষক মতলুবুর রহমান বলেন, শকুনটি অসুস্থ মনে হচ্ছে। চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে উদ্ধারকৃত শকুনটিকে মহাবিপন্ন ‘হিমালয়ী শকুন’ বা ‘হিমালয়ান গৃধিনী’ (Himalayan Griffon) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা। তার ধারণা, শীতে পরিযায়নের পথে শকুনটি খাবারের অভাব বা অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণি শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’ (Critically Endangered)। বাংলাদেশে পাখিটির পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বন বিভাগ ও আইইউসিএনের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।
জোহরা মিলা বলেন, ‘পশু চিকিৎসায় নিষিদ্ধ ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য ও বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এ পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। এটি বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি দেশের মানুষ অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু থেকে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। আইইউসিএনের মাধ্যমে বন অধিদপ্তর পাখিটি রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে আমাদের সদয় হওয়া খুবই প্রয়োজন।’
মন্তব্য করুন