বগুড়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক সাইদুল ইসলাম হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে আসামিদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গলায় রশি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার অপর ২ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাসের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়ার ১ম অতিরিক্ত দায়রা জজ হাবিবা মন্ডল এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী কারিগরপাড়ার (বর্তমানে ফুলবাড়ী মধ্যপাড়ার) মো. আলমের ছেলে মো. মামুন (৩৫), কাটনারপাড়ার কুবা মসজিদ সংলগ্ন মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে মো. জালাল (৪০) ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার আরিফ খা বাসুদেবপুরের জহুরুল ইসলামের ছেলে শাহিন ইসলাম (২৭)। মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামিরা জামিনে যাওয়ার পর থেকেই পলাতক।
এপিপি অ্যাডভোকেট শাব্বির আহমেদ বিদ্যুৎ জানান, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হারিয়াকান্দি মধ্যপাড়ার সরোয়ার্দীর ছেলে সাইদুল ইসলাম (৩৫) ঘটনার ২ মাস আগে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী মাটির মসজিদ সংলগ্ন জনৈক শহিদুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থেকে শহরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।
গত ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সাইদুল ইসলাম তার সঙ্গী অটোরিকশাচালক সোহেল রানাকে জানায় যে, সে দত্তবাড়ি থেকে জয়পুরপাড়ায় যাত্রী নেমে দিয়ে চলে আসবে। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সে বাসায় না ফিরলে পরের দিন তার ছোট ভাই মানিক মিয়া ও আত্মীয়স্বজন বগুড়ায় এসে তাকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বগুড়া সদর উপজেলার ধরমপুর গড়ের হাট ঈদগাঁহ মাঠ সংলগ্ন পূর্বপাশে টিএমএসএস এর ইউক্লিপ্টাস বাগানের মধ্যে তার জবাই করা লাশ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে নিহত সাইদুল ইসলামের ছোট ভাই অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ প্রথমে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করলে সে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে অপর দুই আসামির নাম বলে।
তারা পুলিশকে জানায়, তারা তিন আসামি যাত্রী বেশে ওই অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালক সাইদুল ইসলামকে হত্যা করে লাশ ওই স্থানে ফেলে রেখে অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। মামলাটি এসআই মো. রহিম তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি পরিচালনা করেন রাষ্ট্রপক্ষের বাদী এপিপি অ্যাডভোকেট শাব্বির আহমেদ বিদ্যুৎ এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন।
মন্তব্য করুন