মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:১০ পিএম
আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রাণের ঝুঁকি থাকলেও তিন বাচ্চাকে ছেড়ে যায়নি মা মেছো বিড়াল

উদ্ধারকৃত মেছো বিড়ালের তিন বাচ্চা। ছবি: কালবেলা
উদ্ধারকৃত মেছো বিড়ালের তিন বাচ্চা। ছবি: কালবেলা

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় বৈদ্যুতিক খুঁটির স্তূপ থেকে মা মেছো বিড়ালসহ তিনটি বাচ্চা বন বিভাগের সহযোগিতায় উদ্ধার করেছে স্থানীয় বন্যপ্রাণী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাখি প্রেমিক সোসাইটি’র সদস্যরা।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত ৯টায় উপজেলার বাঘাসুরা ইউপির মানিকপুর গ্রামে তিনটি বাচ্ছাসহ মা মেছো বিড়ালটিকে উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, ওই গ্রামের শাহ আলম মিয়ার বাড়ির কাছে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর পর বাচ্চাগুলো অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে প্রাণের ঝুঁকি থাকলেও মা বিড়ালটি বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে যায়নি বরং সেখানেই অবস্থান করছিল। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যরা খবর পেয়ে বিষয়টি বন বিভাগকে জানায়।

পরে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান, স্থানীয় সাংবাদিক ও পাখিপ্রেমিক সোসাইটি প্রতিনিধি সোহাগ মিয়া, শাহজীবাজারের ফরেস্ট গার্ড সৈয়দ হামিদুর রহমান, গ্রাম পুলিশ মোখলেছুর রহমান ও সাংবাদিক রুবেল আহমেদ রনি প্রমুখের সহযোগিতায় প্রাণীগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের স্থানীয় রঘুনন্দন পাহাড়ে অবমুক্ত করা হয়।

হবিগঞ্জে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী জানান, বন্যপ্রাণী উদ্ধার আমাদের রেগুলার রুটিন কাজ। আজকে পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যরা মেছো বিড়ালগুলোকে উদ্ধার করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল তাদের বিশেষ ধন্যবাদ জানালাম।

বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, মেছো বিড়ালকে (Fishing Cat) অনেক এলাকায় মেছোবাঘ নামেও ডাকে। কিন্তু এর প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল। অথচ বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না। বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

মেছো বিড়ালগুলো উদ্ধার করায় স্থানীয় জনতা ও পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাড়ি ভাঙচুর চেষ্টা ও হুমকি দেওয়া নারী প্রভাষক গ্রেপ্তার

‘সৌদিতে অবস্থানরত ৬৯ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হবে না’

রোমাঞ্চ ছাপিয়ে ফাইনালে চিটাগং

ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে জুলকারনাইন সায়েরের পরামর্শ

‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য’

হুমকির পর জিডি, ক্যাম্পে আনা হলো মনোবিদ

হেলিকপ্টারে চড়ে কর্মচারীর বাড়িতে সৌদি মালিক

খালি পায়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ায় ছাত্রীকে পিটুনি প্রধান শিক্ষকের, হাসপাতালে ভর্তি

বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ‘শেখ বাড়ি’

এবার ‘স্যারকাণ্ডে’ আলোচনায় এসপি আনোয়ার

১০

ছাত্র-জনতার উদ্দেশে নুরের বার্তা

১১

আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা : শাকিল উজ্জামান

১২

যশোর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তমাল, সদস্য সচিব রানা

১৩

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৪

আহত সাংবাদিক জাভেদের সঙ্গে কথা বললেন তারেক রহমান

১৫

ফের বাড়ল সোনার দাম, ভরি কত?

১৬

ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে এবার সাংবাদিক ইলিয়াসের স্ট্যাটাস

১৭

বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের জন্য সুখবর দিল সৌদি আরব

১৮

‘জিয়ার সৈনিক হতে হলে অন্যায়ে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না’

১৯

‘হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে আ.লীগ’

২০
X