কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী সত্য চন্দ্র শীল জেলা কারাগারে বন্দি অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। পরে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার আবু ছায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে কুড়িগ্রাম কারাগারের অভ্যন্তরে সত্য চন্দ্র শীল নিজ শরীরে আগুন দেন বলে দাবি করেছেন জেলার আবু ছায়েম। তিনি বলেন, কারা হাসপাতালের পেছন দিকে উত্তর পাশে নিজ শরীরে আগুন দেন সত্য চন্দ্র শীল। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল হয়ে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি।
কারাবন্দি অবস্থায় আসামি নিজ শরীরে আগুন দেওয়ার সুযোগ পাওয়া প্রশ্নে জেলার বলেন, সম্ভবত সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে তিনি লুকিয়ে নিজ শরীরে আগুন দেন। আমাদের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
কারারক্ষীদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে জেলার বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তিনজন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেল সুপার মো. শফিকুল আলম বলেন, আসামি নিজেই শরীরে আগুন দিয়েছেন। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। কারাবন্দি আসামি অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার (২১ জানুয়ারি) ভোরে নাগেশ্বরী পৌর এলাকার কবিরের ভিটা গ্রামে নিজ ঘরে গৃহবধূ লতা রানীকে (৪০) কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামী সত্য চন্দ্র শীল কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করেন তাদেরই দুই ছেলে। গৃহবধূর ঘরের বিছানার নিচ থেকে রক্তমাখা কুড়াল উদ্ধার করে পুলিশ।
২৬ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর স্ত্রীকে হত্যায় অভিযুক্ত সত্য চন্দ্র শীল ঘটনার পর পালিয়ে যান। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানা পুলিশের সহায়তায় সীমান্ত এলাকায় তার ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন (২২ জানুয়ারি) আদালতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন সত্য চন্দ্র। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
মন্তব্য করুন