রঙিন ফুলকপি চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন পাবনা সদর উপজেলার বিল ভাদুরিয়া গ্রামের কৃষক আসলাম আলী। তার রঙিন ফুলকপিতে পাবনা শহরে এমনকি জেলার অন্যান্য হাটবাজারগুলোতে সবজির দোকান ছেয়ে গেছে। বিনিয়গের তিনগুণ লাভ করছেন তিনি। এতে ভাগ্য বদলে গেল তার।
সবজির পাইকারি বাজারে যেখানে সাদা ফুলকপি বিক্রি হয় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে, সেখানে তিনি রঙিন ফুলকপি ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। যা সাধারণ সাদা ফলকপির তিনগুণ।
সবজির দোকানগুলোতে ক্রেতারা আসার সঙ্গে সঙ্গেই আকৃষ্ট করে এ ফুলকপি। বেচাকেনাতেও ধুম পড়েছে বেশ। প্রথমবার এমন ফুলকপি দেখেই কেনার ইচ্ছা পোষণ করছেন অনেক ক্রেতা। কৌতূহল আর শখের বসে ক্রেতারা রঙিন ফুল কপি কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা।
কৃষক রফিকুল কালবেলাকে বলেন, গত বছর আমার দুই মেয়ে রঙিন ফুলকপির ভিডিও দেখে। এরপর তারা আমার কাছে এসে এই ফুলকপি চাষ করার জন্য অনুরোধ করে। আমিও ভিডিও দেখে মুগ্ধ হই এবং চাষ করার জন্য চিন্তা-ভাবনা করি। এজন্য আমি প্রথমে পাবনা সদর উপজেলা কৃষি অফিসে যাই কিন্তু তাদের কাছে এ বিষয়ে কিছু করার নেই বলে জানান। এরপর ইউটিউবে যে ভিডিও করেছিল তাকে ফোন করি। ওরা বলল ঢাকায় যোগাযোগ করার জন্য, এরপর আমি ঢাকায় বীজ ভাণ্ডারে যোগাযোগ করে বীজ নিয়ে এসে আবাদ করি।
তিনি আরও বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৬ হাজারের বেশি ফুলকপির গাছ রোপণ করেছিলাম। সবগুলো ভালোভাবেই বড় হয়েছে। এখন আমি প্রতিদিন এগুলো কেটে সরাসরি বাজারের নিয়ে বিভিন্ন দোকানে পাইকারি দামে বিক্রি করি। আমি পাইকারি ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। খুচরা বাজারে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত।
রফিকুলের বাবা ওমর আলী বলেন, প্রথম দিকে আমার চিন্তা হয়েছিল যে এগুলো সঠিকভাবে হবে কি না। কিন্তু আমার ছেলের দেড় বিঘা জমিতেই সফলভাবে আবাদ হয়েছে। কপিগুলোও বেশ বড় হয়েছে। আবাদের খরচ অন্যান্য কপির মতোই। আলাদা কিছুই নেই। তবে জৈব সার একটু বেশি দেওয়া লাগে। অনেকেই এক ফুলকপি দেখতে আমাদের জমিতে আসছেন। কেউ ছবি তুলছে আবার কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের তো ভালোই লাগছে।
পাবনা শহরের সবজি বিক্রেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। সাদা কপি বিক্রি হচ্ছে যেখানে ৫০-৬০ টাকা কেজি সেখানে রঙিন ফুলকপি বিক্রি করছি ৮০-১০০টা কেজিতে। ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ থাকায় ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা এসে বলছে, স্বাদও ভালো। আমি নিজেই প্রতিদিন ৫০-৬০ পিচ রঙিন ফুলকপি বিক্রি করছি।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনার উপপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, এগুলো জাপানি জাতের ফুল কপি। আমাদের দেশে মাত্র দুই বছর আগে আবাদ শুরু হয়। পাবনাতে সাধারণত সাদা কপিই চাষ হয়, এবারই প্রথম এ রঙিন কপি চাষ করা হয়েছে। আগামীতে কেউ যদি এমন রঙিন কপি আবাদ করতে চান তাহলে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন