শীতে এবার মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই বেড়েছে। বাড়ছে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ। নিউমোনিয়া নিয়ে কুমিল্লা মুরাদনগর জিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা ফারহানা আক্তার ৯ মাসের শিশুকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। তিনদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পরও তেমন উন্নতি নেই। এখনও চিকিৎসকের পরামর্শে চলছে চিকিৎসা।
একই অবস্থা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার এক বছরের শিশু মাইসার। তিন দিন ধরে ডায়রিয়াজনিত রোগ নিয়ে চিকিৎসাধীন এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই কুমিল্লা মেডিকেলে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। কুমিল্লা সদর, বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এসেছেন এসব রোগী।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. নাইম ইসলাম বলেন, মাঘ মাসের শুরুতে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিনে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র শীতের এই সময়টাতে মৌসুমি জ্বরসহ শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, সাইনোসাইটিস, টনসিলাইটিস, অ্যাজমা, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া একটা অংশের তীব্র জ্বর, গলাব্যথা ও কাশির উপসর্গ রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, শিশু ছাড়াও অনেকের সাধারণ সর্দিকাঁশি, ঠান্ডা, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে শিশু ও বৃদ্ধদের সুস্থ রাখতে ধুলাবালি ও ঠান্ডা পরিবেশ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।
১৮ জানুয়ারি সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই চিত্র দেখা যায়। সব হাসপাতালে চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে দেখা গেছে রোগীদের প্রচণ্ড ভিড়।
কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালের নারী ও শিশু ওয়ার্ডে সর্দি ও কাশি নিয়ে ভর্তি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, গত কয়েক দিন ধরে সর্দি ও কাশি নিয়ে ভর্তি হয়েছি। এ ছাড়া গ্রামের ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ খাওয়াইছি কিন্তু সর্দি ভালো হচ্ছে না। তাই কুমিল্লা সদর জেনারেল হাসপাতালে এসেছি।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডাক্তার নাসিমা আক্তার বলেন, প্রচণ্ড শীতের কারণে হাসপাতালে এখন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ রোটা ভাইরাস নিয়ে রোগীরা বেশি আসছেন। বেশি ঠান্ডার কারণে এটা হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও বাচ্চারা বেশি আসছেন। যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম। অধিক মাত্রায় শীতের এ সময়ে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতর থাকা এবং শরীরকে সব সময় গরম রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র ফার্মাসিস্ট মো. আনোয়ারুল করিম বলেন দৈনিক ১২০০ থেকে ১৫০০ রোগীকে ৫৫-৬০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। সব অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ফুল কোর্স এবং অন্যান্য ওষুধ ক্ষেত্রবিশেষে এক বা দুই মাসের সরবরাহ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন