জয়পুরহাটের পাঁচবিবির মোহাম্মদপুর দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র ফেরদাউস হোসেন ও সোয়াইব হোসেন। তারা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। বসতঘরে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক পাওয়া মুশকিল। তাই পাশে ওয়াইফাইয়ের আওতায় নিজেদের স্মার্ট ফোনে অনলাইনে ক্লাস করছিলেন দুজন। এ সময় তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর মারধর করে হত্যার চেষ্টাও চলে।
জানা গেছে, ওই দুই ছাত্রকে পেছন থেকে কয়েকজন এসে গলায় ছুরি ধরে মুখ বেঁধে পাশে ফাঁকা ফসলের মাঠে নিয়ে যায়। ভোরে তাদের ছেড়ে দিলে বাড়িতে ফিরে স্বজনদের ঘটনা জানায় তারা। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের জয়নুল চৌধুরীর ছেলে ফেরদাউস ও সিদ্দিকের ছেলে সোয়াইব। ঘটনার পর থেকে ওই দুই পরীক্ষার্থীর পরিবার আতঙ্কে আছে।
ভুক্তভোগীদের পরিবার জানায়, সকালের দিকে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে জানালে তিনি পুলিশকে জানান। পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে গেছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছেন।
চোখে-মুখে আতঙ্ক নিয়ে ফেরদাউস চৌধুরী বলে, রাতে আমি ও সোয়াইব অনলাইনে ক্লাস করছিলাম। তখন পেছন থেকে ছয়জন এসে আমাদের মুখ বেঁধে বাড়ি থেকে দূরে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের মারধর করে। তিনজনকে চিনতে পেরেছি। তারা হলেন, আমাদের গ্রামের মাসুদ রানা, আতাউল ও ফটিক। এরা তিনজন আমাকে মারধর করেন। ৫০ লাখ টাকা দিতে বলেন। আমাকে জবাই করতেও শোয়ানো হয়। কিন্তু কী মনে করে তা আর করেনি। সোয়াইবও একই ধরনের বর্ণনা দেয়।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম বলেন, সকালের দিকে অপহৃত ফেরদাউসের মা-বাবা আমাকে ডেকে বলেন, তাদের ছেলেদের এলাকার মাসুদ রানা, ফটিক ও আতাউল অপহরণ করে মাঠে নিয়ে গিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। ছেলে কোনো রকমে সেখান থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছে। তখন বিষয়টি তাৎক্ষণিক মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রবিউল আলম চৌধুরী ও পাঁচবিবি থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসানকে জানাই। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাদের পরিবারের সদস্যদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন