বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, উদ্ধার ও উদ্ধার পরবর্তী সেবা কাজসহ সংশ্লিষ্ট বহুমাত্রিক কাজ করে থাকেন বন অধিদপ্তরে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের হবিগঞ্জ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়। তবে হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়টিতে লোকবল সংকট প্রকট। মাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা দিয়ে চলছে হবিগঞ্জসহ বন কার্যালয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও পাঁচ জেলার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের মতো স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মযজ্ঞ। তবে দায়িত্বে বাইরে গিয়ে এই রেঞ্জ কর্মকর্তাকে সহায়তা করেন জেলা কার্যালয়ে থাকা একজন মালি ও একজন নৈশপ্রহরী।
লোকবল সংকটের কথা নির্দ্বিধায় স্বীকার করলেন ওই কার্যালয়ের দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী। তিনি জানান, বন্যপ্রাণী উদ্ধার অভিযানের সরকারি খরচ বা বাজেটও মিলছে না।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, হবিগঞ্জসহ আরো পাঁচ জেলার বন্যপ্রাণী উদ্ধার সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড করে থাকি। একজন মালি ও একজন নৈশপ্রহরী ছাড়া অফিসের আর কোনো স্টাফ নেই। যারা তাদের অফিসের দায়িত্বের বাইরে গিয়েও আমাকে সহায়তা করেন। কিন্তু তিনজন দিয়েও এই বিশাল এলাকার দায়িত্ব সামলানো অসম্ভব।
কার্যালয়টির অফিসসূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলাসহ সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও নেত্রকোনা জেলার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারসহ যাবতীয় কাজ ওই বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের হবিগঞ্জ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় করে থাকে। এদের কার্য এলাকার মধ্যেই রয়েছে লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা, হাকালুকি হাওর, বাইক্কাবিলসহ অসংখ্য হাওর-বাওর ও অভয়ারণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বন্যপ্রাণীদের বিচরণক্ষেত্র।
বন্যপ্রাণী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহবায়ক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি কার্যালয়ে তিনজন লোকবল দিয়ে ৬ জেলার বন্যপ্রাণী উদ্ধারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে অত্র এলাকায় বন্যপ্রাণীর উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্বজিৎ অভিযোগ করেন, তাছাড়া হবিগঞ্জ জেলার জাতীয় তথ্য বাতায়নেও বন অফিসের কোনো তথ্য নেই। ফলে হবিগঞ্জ অফিসের আওতাধীন কোনো জেলা থেকে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারেন না কোনো নাগরিক বা স্বেচ্ছাসেবী। এতেও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ সময় অফিসটিতে দ্রুত লোকবল সংকট নিরসনের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সীমিত লোকবল দিয়েও আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি বন্যপ্রাণীর সেবামান সুনিশ্চিত করতে। তবে হবিগঞ্জের ওই অফিসের লোকবল সংকট নিরসনে আমরা অধিদপ্তরের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন