শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুনামগঞ্জে সেতু নির্মাণে জনতার ক্ষোভ

আনন্দপুরের বড়খালে সেতুর তৈরির কার্যক্রম চলছে। ছবি : কালবেলা
আনন্দপুরের বড়খালে সেতুর তৈরির কার্যক্রম চলছে। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জের দিরাই-শাল্লা সড়কের ছায়ার হাওর এলাকায় দুটি সেতু নির্মাণের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে এলাকাবাসী আন্দোলনে নেমেছেন। শুক্রবার সেতু নির্মাণ স্থানে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। যেখানে সেতু নির্মাণ হচ্ছে, হাওরের বা বন্যার পানি নিষ্কাশনে কোনো কাজে লাগবে না। হাওররক্ষা বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এলাকাবাসী জানান, দিরাই-শাল্লা-জলসুখা সড়কের আঙ্গারুয়া গ্রামের পাশে সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে সেতুর নির্মাণ স্থান উত্তরে সরিয়ে নেওয়া হয় গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম দিকের সড়কে। এলাকাবাসী মনে করছেন, এখনকার স্থানে সেতু হলে জলাবদ্ধতার পানি ছাড়া হাওরের কোনো পানি নিস্কাশন হবে না। কেবল সরকারি টাকার অপচয় হবে।

আরেকটি সেতু করা হচ্ছে আনন্দপুরের বড়খালে। এটিও পশ্চিমে সরিয়ে বড়খালের মধ্যে করলে ভালো হতো। ওখানেও মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর এটি সরিয়ে বড়খালের বাঁধের পূর্বদিকে আনা হচ্ছে। এ সেতুও পানি নিষ্কাশনে কাজে আসবে না। বরং কোনো কারণ ছাড়াই সড়ক আঁকাবাঁকা তৈরি হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

আনন্দপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা দরশন মাইষ্য বললেন, গত বছর সেতু করার লাগি (জন্য) সড়কে মাপামাপি হইছিল, তারা কইছিল রাস্তা সুজা করা ও বর্ষায় পানি যাওনের লাগি সড়কে ব্রিজ (সেতু) বানাইবো (করবে)। পরে একদল মানুষ মাটি পরীক্ষাও করেছে, অখন দেখি অন্য জাগাত বানাইতাছে, যেখানে দিলে পানি গেলনে এই জাগাত না দিয়া সড়ক বেকা তেরা কইরা করতাছে, ইখানো ব্রিজ করলে পানি চলনের কোনো কাম অইতো নায়, হুদা সরকারের টেকা নষ্ট করা অইবো, কামের কাম কোনতা হইতো নায়।

এলাকার সামজকর্মী বিকাশ চক্রবর্তী বললেন, যে চিন্তা করে সেতু তৈরি হচ্ছে, সেই কাজ মোটেও হবে না, সড়কে বারবার মাপ হচ্ছে, আর স্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে, এলাকাবাসীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

এলাকার আরেক সমাজকর্মী পান্ডব রায় বলেন, শাল্লা সদর থেকে আনন্দপুর পর্যন্ত তিনটি সেতু হবে। একবার দেখলাম আঙ্গাউড়া গ্রামের পাশে লাল নিশান, দুদিন পরে দেখি এসব নাই। পরের দিন দেখি নওয়াগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে সড়কে লাল নিশান, আবার শুক্রবার সকাল থেকে নওয়াগাঁও গ্রামের উত্তর মাথায় সড়কে মেশিন দিয়ে মাটি কাটছে। ওখানে সেতু হলে পানি নিষ্কাশনের কাজে আসবে না। প্রথম যেখানে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেখানে করলে কাজে লাগত।

গ্রামের অরবিন্দু বিশ্বাস বললেন, সড়ক বিভাগের লোকজন এলাকাবাসীকে সেতু কোথায় হবে ম্যাপও দেখাতে পারছেন না।

এ ছাড়া সুখলাইন গ্রামের দক্ষিণ পাশের সেতুতে পাইলিং সঠিকভাবে হচ্ছে না দাবি করেছেন এলাকাবাসী। পাইলিংয়ে নিচের দিকে নয়টি রড এবং উপরের দিকে ১৮টি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এলাকাবাসী এটি ডিজাইন মোতাবেক হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওখানকার দুটি সেতু নির্মাণে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এটি মদনপুর-দিরাই-শাল্লা-আজমিরিগঞ্জ সড়ক প্রকল্পের কাজ। সেতু নির্মাণের স্থান নিয়ে এলাকায় ভিন্নমত তৈরি হওয়ায় আমরা শনিবার সকাল থেকেই সরেজমিনে দেখতে এসেছি। স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যেও সেতুর স্থান নিয়ে আলাদা আলাদা মতো রয়েছে। আমরা বলেছি, তারা যেভাবে উপকৃত হন, সড়ক এবং সেতুও যাতে ঠেকসই হয়, হাওরের ফসলের জন্য যেখানে করলে উপকার হয়, সেটি নির্ধারণ করতে আমরা সেখানেই সেতু করব।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রাং বললেন, আনন্দপুর ও আঙ্গারুয়া গ্রামের পাশের সেতুগুলোর স্থান নিয়ে এলাকায় কথা উঠেছে। আমরা ওখানে প্রকৌশলীদের পাঠিয়েছি, তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলবেন। কোথাও কোন অনিয়ম হচ্ছে না। ডিজাইনেই ফাইলিংয়ের নিচের দিকে রড় কম দেওয়া আছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা / সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা ছাত্রশিবিরের

‘নো ওয়ার্ক নো স্কুল’ আন্দোলনে ঢাবি সাদা দলের সংহতি

ইসরায়েলি গণহত্যা  / যুক্তরাষ্ট্রের পিএইচডি অফার ফিরিয়ে দিলেন ঢাবি শিক্ষক 

সাবেক এমপি আফজাল ফের ৭ দিনের রিমান্ডে 

বের হচ্ছিল দুর্গন্ধ, উদ্ধার হলো ভাইবোনের মরদেহ

ইসরায়েলে নেমে এল নতুন বিপদ

ঢাকার বাতাস আজও অস্বাস্থ্যকর

জবিতে নো ওয়ার্ক কর্মসূচি, ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত

পাকিস্তানে পড়তে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর

সাফারি পার্কে চুরি হলো আফ্রিকান লেমুর

১০

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

১১

গাজায় বর্বরতা / মরক্কোয় হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে

১২

ঝুলে থাকা তার সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে যুবকের মৃত্যু

১৩

বংশালে ফার্নিচারের দোকানে আগুন, নিহত ১

১৪

বিয়ে করলেন জামিল ও মুন

১৫

গাজার এ পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্প দায়ী: হামাস

১৬

অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী বাংলাদেশি লেনিনের পরিচয়

১৭

ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

১৮

রংপুরে দুপক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী নিহত, সাবেক এমপিসহ বহিষ্কার ৮

১৯

সাঈদীর কবর জিয়ারতে যাচ্ছিলেন, পথে ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু

২০
X