কুড়িগ্রামের উলিপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগ। এতে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১০ দিনে ৩১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে আরও ৩২৭ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ড না থাকায় রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় বিছানা পেতে থাকতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনে ৩১০ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন হাসপাতাল ছাড়ছেন ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী। আবার প্রতিদিন ঠান্ডাজনিত আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন ২৫ থেকে ৩০ জন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। এদের মধ্যে তীব্র ডায়রিয়ায় আব্দুল্লাহ (১৫ মাস), রোহান (১৪ মাস), মাসরাফি (১৫ মাস) রেদোয়ান (১৫ মাস) ও হুমায়ুন ইসলামসহ (৫ মাস) আরও অনেক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বিছানা পেতেছেন অভিভাবকরা। আবার কিছু শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শাসকষ্ট ও সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। শয্য সংকটের কারণে অনেককে মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শয্যা সংকটেও তারা চকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
উপজেলার পৌরসভাধীন কাশিরখার এলাকার এলাকার বাসিন্দা বিপুল মিয়া ও তার স্ত্রী ১৫ মাস বয়সী আব্দুল্লাহকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তারা জানান, ৫ দিন থেকে হাসপাতালে আছেন। তাদের ছেলে কযেকবার পাতলা পায়খানা ও বমি করলে তারা হাসপাতালে ভর্তি করান। এখন আব্দুল্লাহ অনেকটা সুস্থ আছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ মাহবুবা বেগম বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় শয্যা কম থাকায় ডায়রিয়া আক্রান্ত অনেক রোগীকে বারান্দায় চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তবে সেখানেও তাদের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেশকাতুল আবেদ বলেন, গত কয়েকদিনের শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে শিশুদের ডায়রিয়া এবং বয়স্কদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বেড়েছে। দিনে দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। তবে শিশু ওয়ার্ডের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। সীমিত জনবল দিয়ে আমরা তাদের যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন এমন থাকবে। তবে এ মাসে আরও একটি শৈতপ্রবাহ এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। এতে করে শিশু ও বয়স্কদের একটু সমস্যা হতে পারে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন