জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার শালপাড়া বাজারের একটু অদূরে হারুন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় জ্বালানির কাজে কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও লাকড়ি।
এতে একদিকে যেমন উজার হচ্ছে গাছপালা। অন্যদিকে ইট ভাটায় কয়লার বদলে কাঠ পোড়ানোর কারণে হুমকিতে আছে পরিবেশ। মানা হচ্ছে না ইট তৈরি ও ভাটা স্থাপন আইন। এই ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে মূল্যবান বনজ ও ফলদ গাছ। ভাটার ধুলো, কালো ধোঁয়া ও আগুনের তাপে ধ্বংস হচ্ছে নিকটবর্তী এলাকার সবুজ মাঠ, বনজসম্পদ ও ফলদ গাছ।
এ বিষয় স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করলেও ইটভাটার মালিক পাত্তা দেয় না। তাছাড়া ইটভাটার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুলতে ভয় পায় এলাকার কৃষকরা।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে পাঁচবিবি উপজেলার শেষ সীমানা শালপাড়া বাজার থেকে একটু দূরে উত্তর পাশে সদর উপজেলার মধ্যে অবস্থিত হারুন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় সরেজমিনে দেখা যায়, ভাটায় জ্বালানির কাজে কয়লার বদলে বনজ ও ফলের গাছের কাঠ ও লাকড়ি পোড়ানো হচ্ছে। ভাটার পশ্চিম ও পূর্ব পাশে ফসলি জমি। কৃষকরা বর্তমানে ভুট্টা ও আলু চাষাবাদ করেছেন।
কৃষকরা বলছেন, আমাদের তিন ফসলি জমির সঙ্গেই ইট ভাটা স্থাপন করায় আশানুরূপ ফসল উৎপাদন করতে পারেন না।পরিবেশের নিয়মনীতি না মেনে ইটভাটা চালানোর গত বছর প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও এবছর আবারও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে কয়লার বদলে কাঠ ও লাকড়ি পোড়াচ্ছে।
ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, প্রতিদিন আমাদের ইটভাটায় গড়ে ২২ থেকে ২৫ মণ কাঠ ও লাকড়ির প্রয়োজন হয় তবুও হাতা পায় না। তা ছাড়া ভাটায় ইট পোড়ানোর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়লার কোনো ব্যবহার করা হয়নি। প্রতিদিন ইটভাটায় কাঠ ও লাকড়ি পোড়ানো হচ্ছে।
পরিবেশের ছাড়পত্র আছে কি না এবং ইটভাটায় কয়লার বদলে কাঠ পোড়াচ্ছেন কি না- এ বিষয়ে জানতে হারুন ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী মো. হারুনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, শুধু আমার পরিবেশের ছাড়পত্র নয় জেলার কারও নেই খোঁজ নিয়ে দেখেন। আর ভাটায় কোনো কাঠ বা লাকড়ি পোড়ানো হচ্ছেনা। কয়লা পোড়ানো হচ্ছে।
যদিও ভাটার শ্রমিক বলছেন, কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এবং ইটভাটার চারদিকে সরেজমিনে ঘুরে কয়লার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
জয়পুরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, হারুন ব্রিকস নামের ইটভাটার কোনো ছাড়পত্র নেই। অবগত হলাম। পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আব্দুল আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন