শেরপুরে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে নুরজাহান (৩২) নামের এক গৃহবধূ ও তার সাত বছর বয়সী শিশুসন্তান নাদিফাকে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা দুজনের গলা কেটে মৃত ভেবে ফেলে যায়। ওই দুজন এখনো বেঁচে রয়েছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারা। তবে এখনো শঙ্কামুক্ত নন।
এদিকে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকালে গোপালখিলা সড়কে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ কর্মসূচি থেকে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়।
জানা যায়, আহত গৃহবধূ নুরজাহানের স্বামী সাইফুল ইসলাম ঢাকায় রিকশা চালান। নুরজাহান শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়িতেই থাকেন। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তার প্রতিবেশী আব্দুস ছালাম ওরফে ঠান্ডুর ছেলে শাহিনের বিরোধ চলছে। সম্প্রতি বিরোধপূর্ণ জমি ছেড়ে না দেওয়ায় শাহিনসহ অজ্ঞাত তিনজন গত ৪ জানুয়ারি গভীর রাতে সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ করেন।
পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘুমন্ত গৃহবধূ নুরজাহান ও তার মেয়ে নাদিফার ওপর হামলা করে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নুরজাহানের গলায়, মুখে, মাথায় এবং শিশু সন্তানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে। এতে ওই নারীর গলায় তিনটি অংশে ৮৬টি শেলাই দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর ভাসুর বাদী হয়ে গত ৬ জানুয়ারি প্রতিবেশী শাহিনসহ অজ্ঞাত তিনজনের বিরুদ্ধে শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবারের মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে নুরজাহান ও তার মেয়েকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া রাতে গ্রামের লোকজন সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘর থেকে কেউ বের হয় না। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
গরজরিপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবারের খোঁজ নিয়েছি। আইনগত সহায়তার ব্যবস্থা করেছি। আমি অপরাধীদের শাস্তি দাবি করছি।’
এ ঘটনায় শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আরাফাতুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরের দিনই প্রধান আসামি শাহিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে কে জড়িত তা বের করে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এ ব্যাপারে গ্রেপ্তার হওয়া শাহীনের বাবা আব্দুস ছালাম ওরফে ঠান্ডু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমরা ঘুমে ছিলাম। কিছু জানি না। আল্লাহ ভালো জানেন।’