বগুড়ায় ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণের সময় স্থানীয় জনগণ জাতীয় পার্টির দুই নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনতার কবল থেকে তাদের হেফাজতে নিয়ে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে তাদের আটক করে স্থানীয়রা।
আটকরা হলেন- বগুড়া শহর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তাহের আকন্দ ও কর্মী দেবেক মিয়া।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বেলা ১১টার দিকে উত্তর চেলোপাড়া লায়ন কমিউনিটি সেন্টারে দলে দলে নারীদের প্রবেশ করতে দেখেন। এতে এলাকাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলে স্থানীয় একদল যুবক ওই কমিউনিটি সেন্টারের সামনে যান। তারা সেখানে যাওয়া সমবেত নারীদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, এনজিও থেকে তাদের ডাকা হয়েছে। পরে ওই যুবকরা কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে ঢুকে দেখতে পান কয়েকজন ব্যক্তি আগত নারীদের জনপ্রতি ২০০ টাকা দিচ্ছেন। কীসের টাকা বণ্টন হচ্ছে তা জানতে চাইলে কয়েকজন পালিয়ে যান। এসময় দুজনকে স্থানীয়রা আটক করে। তারা ভোট কেনার জন্য টাকা বণ্টন করছিল বলে স্থানীয়দের জানায়। পরে নির্বাচন অফিসে বিষয়টি জানানো হলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে পৌঁছে। আটক দুজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হেফাজতে নেয়। পরে তাদের বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, তারা ঈগল মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য টাকা বণ্টন করছিল। তবে আটক ব্যক্তিরা জানান, তারা জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে লাঙ্গল মার্কার ভোটের টাকা দিচ্ছিলেন।
লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী আজিজ আহম্মেদ রুবেল বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আবু তাহের আকন্দ শহর জাতীয় পার্টির সভাপতি। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পরপরই তিনিসহ বগুড়া শহর এবং সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত আছেন। তাদের চাহিদামতো নির্বাচনী খরচ দিতে না পারায় তারা আমার সাথে নেই। এ কারণে লাঙ্গল মার্কার পক্ষে টাকা বিতরণের প্রশ্নই আসে না।
অপরদিকে ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবীর আহম্মেদ মিঠু বলেন, আটক ব্যক্তিদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আমার নির্বাচনে কোনো কাজ করছে না। কাজেই আমার পক্ষে ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণের কোনো কারণই নেই।
বগুড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণের সময় স্থানীয়রা দুজনকে আটক করে। ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানান, ঈগল মার্কার পক্ষে ভোটারদের টাকা দেওয়া হচ্ছিল।
অপরদিকে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা লাঙ্গল মার্কার পক্ষে টাকা বিতরণ করছিলেন। আটক দু'জনকে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ যাচাইবাছাই করে তাদের আদালতে সোপর্দ করবে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, আটক দুই ব্যক্তি থানা হেফাজতে আছে। তাদের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্তব্য করুন