এস এম জুবাইদ, পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার-১ আসন

ট্রাকের দুর্গে হাত ঘড়ির হানা, বলয় তৈরিতে মরিয়া ট্রাক প্রতীক

কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের দুই প্রার্থী। ছবি : সংগৃহীত
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের দুই প্রার্থী। ছবি : সংগৃহীত

আর মাত্র কয়দিন পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ছাড়া এ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে নৌকা প্রতীকশূন্য মাঠে হাতঘড়ি ও ট্রাক প্রতীকের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই জমে উঠেছে। এবার এ আসনে ট্রাকের দুর্গে হানা দিচ্ছে হাত ঘড়ি। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। এ আসনে মূলত লড়াই হবে হাতঘড়ি ও ট্রাক প্রতীকের মধ্যে। তবে এ আসনের পরিস্থিতি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এ আসনে অপর চার প্রার্থী হলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির বশিরুল আলম (হাতুড়ি), ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ বেলাল উদ্দিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কমর উদ্দিন আরমান (কলার ছড়ি) ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী (ঈগল)।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম হাত ঘড়ি প্রতীকে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। ইব্রাহিমের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায় হলেও তার মেধা, প্রজ্ঞা দিয়ে এ আসনের ভোটারদের মন জয় করছেন তিনি। চকরিয়া-পেকুয়া থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দখলবাজি বন্ধে তিনি কাজ করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন এবং বাকি উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে পুনরায় ভোট প্রার্থনা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম।

এদিকে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে দলীয় সমর্থন দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ। তার পক্ষে এ আসনে নৌকা প্রতীক মনোনীত প্রার্থী আলহাজ সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, ফাশিয়াখালীর চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, সুরাজপুরমানিকপুর চেয়ারম্যান আজিম, বদরখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরে হাবিব আরিফ, পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম গিয়াস উদ্দিন, জি এম আবুল কাসেম, মগনামার ইউনুস চেয়ারম্যান, রাজাখালীর বাবুল চেয়ারম্যানসহ জেলা ও চকরিয়া পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের অংশ নেতাকর্মী সরাসরি কাজ করছেন। তারা বলছেন, গত পাঁচ বছর চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ ভয়ভীতির মধ্যে ছিলেন। নিরাপদে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হলে দখলবাজ ও চাঁদাবাজ চক্র থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে হাতঘড়ি মার্কায় ভোট দেওয়ার বিকল্প নেই।

অভিযোগ আছে, গত পাঁচ বছর জাফর আলমের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। সরকার কৌশলগত কারণে এ আসনটি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিকে ছেড়ে দেয়। ইব্রাহিম বর্তমানে এই আসনে কৌশলগত সুবিধায় থাকলেও ভোটের মাঠে এখনো শক্ত অবস্থানে রয়েছেন ট্রাক প্রতীকের এমপি জাফর আলম। তিনি গত পাঁচ বছর ত্যাগী নেতাকর্মীর মূল্যায়ন না করে একতরফা দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এ ছাড়া পেকুয়ায় একটি নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সমালোচনা করায় দলীয় পদ হারান তিনি। এরপর কর্মীরা সরে পড়তে শুরু করে। এক সপ্তাহ আগেও তার নিজস্ব কার্যালয়ে শতশত নেতাকর্মী জড়ো হতেন। তারা এখন খবর রাখছেন না জাফর আলমের। তারপরও এমপি জাফর তার সাম্রাজ্যে ইব্রাহিমকে মেনে নিতে নারাজ। তাই তিনি সর্ব শক্তি দিয়ে মাঠ ধরে রাখতে চান। এখন ভোটের মাঠে গণসংযোগ করছেন জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদ বেগম, কন্যা ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তানিয়া আফরিন এবং পুত্র তানভির সিদ্দিকী তুহিন। কিছু নেতাকর্মী ছাড়া কাউকে তেমন দেখা যাচ্ছে না তার পাশে।

চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত ৫ বছরে এমপি জাফর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বাদ দিয়ে নিজস্ব বলয় তৈরী করে চকরিয়া-পেকুয়ায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি করে সাধারণ মানুষকে জীম্মি করেছেন। এবার সাধারণ মানুষ এর জবাব দেবে।

জাফর আলম অভিযোগ করেন, গত কয়েক দিনে তার সমর্থক অনেক নেতাকে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকে গা ডাকা দিয়েছেন। ভোটের মাঠে এর প্রভাব পড়তে পারে।

অন্যদিকে মোহাম্মদ ইব্রাহিম অভিযোগ করেন, এমপির ক্যাডাররা হাতঘড়ির কর্মীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। পোস্টার এবং ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

উল্ল্যখ্য যে, স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দু’বার, জাতীয় পার্টি তিনবার, বিএনপি পাঁচবার ও জামায়াতে ইসলামী একবার জয়লাভ করে। এদিকে বিএনপি-জামায়াতের ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর এখানে। জাতীয়ভাবে দল দু’টি নির্বাচন বর্জন করলেও এই ভোটারগুলো ভোটকেন্দ্রে গেলে ফলাফল নির্ধারণে ফ্যাক্টর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মিছিলে বিএনপি নেতার গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

রৌমারীতে ব্যবসায়ীদের আহ্বায়ক কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত

৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়ায় মামুনের বিরুদ্ধে যুবদলের মামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ক্ষমা পেয়ে আমিরাত থেকে ১২ জন ফিরছেন চট্টগ্রামে

‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার দুই ভাবে পরাজিত’

মহানবীকে (সা.) কটূক্তিকারী সেই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা

শিবচর আঞ্চলিক সড়কে গ্রামবাসীর বৃক্ষরোপণ

মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকার চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা, ৭ দিন পর ফাঁস

১২ দিনেও মেলেনি রানীনগরে নিখোঁজ নার্গিসের সন্ধান

১০

দায়িত্বশীলদের নিয়ে সাতক্ষীরায় ছাত্র শিবিরের সমাবেশ

১১

আযহারী শিক্ষার্থীরা হবে বাংলাদেশ ও মিশরীয় ঐতিহ্যের সেতুবন্ধন : মিশরীয় রাষ্ট্রদূত

১২

রাজশাহীতে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

১৩

আন্দোলনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ কর্মীকে গণধোলাই

১৪

আশুলিয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিক অসন্তোষ ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক সমাবেশ

১৫

কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

১৬

পাকিস্তানের জলসীমায় বিপুল তেল-গ্যাস মজুতের সন্ধান

১৭

বিসিবির দুর্নীতির তদন্ত দাবি সাবেকদের

১৮

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

১৯

জেল খেটেছি তবু শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাইনি : সাবেক এমপি হাবিব

২০
X