শীত আসলেই মনে পড়ে শীতের হরেক রকম মুখরোচক পিঠার কথা। বর্তমানে শীতের জনপ্রিয় পিঠা ভাপা ও চিতু পিঠা। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। শীতের শুরুতে গোধূলী বেলায় হালকা কুয়াশা নেমে আসতে না আসতেই শহরের ফুটপাতে সব ধরনের পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু করে দেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা।
ছোট্ট চুলায় মাটির পাতিলে পানি ভরে মুখ লেপে ছোট করে তার ওপর পাতলা কাপড়ের আস্তরণ দিয়ে বসে পড়েন পিঠার কারিগর। পাতলা কাপড়ে মুড়ে পাতিলের ওপর বসিয়ে আগুনের তাপে পানির বাষ্প উঠে তৈরি হয় ভাপা পিঠা। ছোট্ট চুলায় মাটির পাতিলে পানি ভরে মুখ লেপে ছোট করে তার ওপর পাতলা কাপড়ের আস্তরণ দিয়ে বসে পড়েন পিঠার কারিগর। পাতলা কাপড়ে মুড়ে পাতিলের ওপর বসিয়ে আগুনের তাপে পানির বাষ্প উঠে তৈরি হয় ভাপা পিঠা। এ ছাড়া বিভিন্ন হাটবাজারে, রাস্তার মোড়ে, পাকা রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান ঘুরতে দেখা যায়। মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি থাকে।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি ও খাওয়ার পালা। কারণ শীতের সকালে বা সন্ধ্যায় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার যে স্বাদ সেটা অন্য কোনো সময় পাওয়া যায় না।আর শীতে যত রকমেরই পিঠা তৈরি হোক না কেন ভাপা পিঠার সাথে অন্য কোনো পিঠার তুলনাই হয় না। এই পিঠা বিক্রি করেই শীতের সময় অনেকে সংসার চালান। গ্রামের হাট বাজারগুলোর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে,ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা। অনেকেই মৌসুমী এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন। তেমন একটা পুঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। তাই তো অনেকেই মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে এটা বেছে নেন।
এ ছাড়া এসব দোকানগুলোতে দেখা যায় পিঠা পাগল লোকজনদের উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারাও আনন্দেও সাথে ভাপা পিঠা বিক্রি করে থাকে। সাজিঊড়া মোড়, থানা মোড়, সাউদপাড়া মোড়, বাসস্ট্যান্ড মোড় সহউপজেলা সদরের ফুটপাতে এই পিঠার দোকান দেখা যায়। শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।
সরেজমিনে পিঠা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেন্দুয়ায় এসব দোকান গুলোতে পিঠা বলতে পাওয়া যায় কেবল ভাপা পিঠা, ঝাল পিঠা, তেলের পিঠা, সাদা পিঠা আর চিতই পিঠা। তাই মৌসুমি এই পিঠার প্রতি অনেকের বেশ আগ্রহও দেখা যায়। বছরের সাময়িক সময়ের এই পিঠার বাজার এখন থেকেই জমে উঠেছে। মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হলেও বিশেষ করে সন্ধ্যার সময় এই পিঠার চাহিদা বেশি থাকে বলেও জানান বিক্রেতারা।
কেন্দুয়ার থানা মোড় এলাকায় প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করেন সালমা আক্তার। স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে জীবন যুদ্ধে একাই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। বছরের ছয় মাস পিঠা তৈরি ও ছয় মাস বাড়িতে থেকে কষ্ট করে চলে সালমা আক্তারের সংসার।
তিনি আরও বলেন স্বামী অটোরিকশাচালক আর আমি কয়েক বছর ধরে বছরের ছয় মাস পিঠা বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচ বহন করছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও রয়েছে ক্রেতার ভিড়। প্রতিনিয়ত ক্রেতার ভিড় বেড়েই চলেছে। এতে আয় রোজগার ও হচ্ছে ভালো।
এভাবে শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে। ক্রেতা মামুন এবং সাকি বলেন, শীত মানেই পিঠা খাওয়ার ধুম। তবে সেই পিঠা যদি হয় ভাপা পিঠা তাহলে তো কোন কথাই নেই। নিজেকে রিফ্রেশ করার জন্য দিনের শেষে বন্ধুদের নিয়ে সন্ধ্যায় আসি ভাপা পিঠা খেতে। এতে করে সবার মাঝে ভালো লাগা কাজ করে।
মন্তব্য করুন