রংপুর-২ আসনে নির্বাচনী প্রচার এখন তুঙ্গে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন আগামীতে কে কি করবেন তার প্রতিশ্রুতি। তবে, এই আসনে এবার বর্তমান সংসদ সদস্য ডিউক চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষকলীগ নেতা বিশ্বনাথ সরকার বিটু দুজনই নির্বাচিত হবেন, এই আশায় প্রচার তুঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-২ আসন। প্রথম থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত এ আসনে কোনো দলই একক আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি। কখনো আওয়ামী লীগ বা কখনো জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডিউক চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কৃষকলীগ নেতা বিশ্বনাথ সরকার বিটু এখন আলোচনা তুঙ্গে। স্থানীয়রা বলছেন, মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আনিষুল হক চৌধুরী, ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আনিসুল হক চৌধুরী। ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আসনটি দখলে নিয়ে জাতীয় পার্টির কামাল উদ্দিন হায়দার। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদ (উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির পরিতোষ চক্রবর্তী), ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এইচ এম এরশাদ নির্বাচিত হলেও উপনির্বাচনে আসনটি ফিরে পায় আওয়ামী লীগের আনিসুল হক চৌধুরী। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির আনিছুল ইসলাম মন্ডল নির্বাচিত হলেও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয় পান তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকলীগ নেতা বিশ্বনাথ সরকার বিটু ছুটে চলেছেন একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত। সমান তালে চলছেন বর্তমান সাংসদ ডিউক চৌধুরীও। ডিউক চৌধুরী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বিশ্বনাথ সরকার বিটু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরছেন। তবে, এই আসনে জাপার সাবেক সাংসদ আনিছুল ইসলাম মন্ডলও আছেন আলোচনায়।
বদরগঞ্জের মধুপুর ইউনিয়নের ভোটার রায়হান বলেন, ভোটের আগে সবাই তো অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়। এবার হামরা দেকিশুনি ভোট দেমো।
বিশ্বনাথ সরকার বিটু জানান, আমি বদরগঞ্জ উপজেলায় যখন ভোট করি তখন বর্তমান সাংসদ আমার সঙ্গে ভোটে হেরে যান। আমি তখন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় মানুষের জন্য কাজ করেছি।
তিনি বলেন, আমি সেবক হতে চাই। তারাগঞ্জ বদরগঞ্জের মানুষের সেবক হতে চাই। সাংসদ হবে জনগণের সেবক, সাংসদ হবে জনগণের সুখ দুখের কাণ্ডারি। তারা যেন সাংসদকে কাছে পায়। আমি শাসক হতে চাই না সেবক হতে চাই। তিনি আরও বলেন, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবো।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডিউক চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে মঙ্গাকবলিত এই এলাকার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এলাকার মানুষের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এবারও তারা নৌকার জয় নিশ্চিত করবেন বলে প্রত্যাশা করি। প্রধানমন্ত্রী এসে আমার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমি এই এলাকার যে উন্নয়ন করেছি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসে আমার জন্য ভোট চেয়েছেন সুতরাং বদরগঞ্জ তারাগঞ্জের মানুষ আমাকে ভোট দিবে।
মন্তব্য করুন