আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে সড়কপথে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৯টায় গণভবন থেকে রওনা দেন তিনি। আর কিছুক্ষণ পরেই বরিশালের সমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিকেল ৩টায় তার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এরই মধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় ভরে গেছে। এর আগে সকাল ৮টা থেকেই লাল ও হলুদ রঙের ক্যাপ পরা নেতাকর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে মাঠে আসছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মাঠ প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। চেষ্টা চলছে মঞ্চের কাছাকাছি থাকার। আর এই লাল ও হলুদের প্রতিযোগিতায় বিভক্ত আওয়ামী লীগের বিরোধটা আবারও প্রকাশ্যে চলে এসেছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সচেতনরা।
লাল ক্যাপ পরা নেতাকর্মীরা বরিশাল-৫ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিমের সমর্থক। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য। অপরদিকে হলুদ ক্যাপ পরা সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহর সমর্থক। সাদিক আব্দুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। প্রতীকও পেয়েছিলেন ঈগল।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করে। আদালতের শরণাপন্ন হন সাদিক। সেখানে তার প্রার্থিতা ফিরে পেলেও আপিল বিভাগে তা বাতিল হয়। আবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আগামী ২ জানুয়ারি সাদিকের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আবেদনের শুনানি রয়েছে।
তার সমর্থকদের বিশ্বাস ২ জানুয়ারি সাদিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন। আর এর জন্যই আজকের প্রধানমন্ত্রীর সামনে তার বিশাল নেতাকর্মীর বহর দেখানোর চেষ্টা চলছে।
সকাল ৭টা থেকেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জমায়েত হতে থাকেন লাল-হলুদ ক্যাপধারীরা। সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে এদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। এর পরপরই সবাই রওনা হন বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দিকে।
তবে নিজেদের অংশগ্রহণ স্পষ্ট করতে পৃথক ক্যাপ পরলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ। স্থানীয় নেতারা জানান, দলের সভাপতি তার বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেবেন। জনসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হবে এবং এটি বরিশালের ইতিহাসে বৃহত্তম সমাবেশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে ৬ স্তরের কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে বরিশালের পুরো নগরীকে। সভাস্থলগামী সব সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাঠে প্রবেশের সময় প্রতিটি কর্মীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। তৃষ্ণা নিবারণে হাজারো পানির বোতল মাঠের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বরিশাল যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল সফরকালে এ বঙ্গবন্ধু উদ্যানেই এক জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন তিনি।
মন্তব্য করুন