এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। দুবারের এ সংসদ সদস্য দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ঈগল প্রতীকের তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ এবং আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ট্রাক প্রতীকের মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অংশ নেওয়ায় নির্বাচনের মাঠে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি রয়েছেন।
আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যানের পদে একাধারে ৭ বছর দায়িত্ব পালন করে পদত্যাগ করেছেন। ওই ইউনিয়নের উন্নয়নের কারণে এবং আশুলিয়ার শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক থাকায় সাভারের শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় তার গ্রহণযোগ্যতাকে ভোটের মাঠে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ভোটের হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পাথালিয়া ও ইয়ারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা তাকে সমর্থন দিচ্ছেন।
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা হলেই সাইফুল ইসলাম সেটি দ্রুত সমাধান করেছেন। করোনার সময় শ্রমিকদের পাশে ছিলেন। শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা কবরস্থানের দাবিটিও তিন বেশ কয়েক মাস আগে রক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী শ্রমিক-অধ্যুষিত আশুলিয়ার ভোটাররা সবাই তাকেই ভোট দেবেন নিজেদের স্বার্থেই।
অপরদিকে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদকে স্থানীয় ভোটাররা তার পারিবারিক পরিচিতির কারণে এবং স্থানীয় সাবেক আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও বেশ কয়েকটি ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় এবারের নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে দেখছেন।
সাভার পৌর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও তৌহিদ জংয়ের সাভার পৌরসভার ৭৩টি কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আবদুল হালিম বলেন, গত ১০ বছরে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের একজন কর্মীও তৈরি করতে পারেনি। উল্টো দলের পরীক্ষিত কর্মীরা যাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন তাদের দলীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলে এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। আওয়ামী লীগ পরিবার থেকে রাজনীতিতে এসেছেন মুরাদ জং। সব দিক বিবেচনায় তার জন্যই কাজ করছেন সবাই। ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
তবে গত দুটি নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এনামুর রহমানের রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, গার্মেন্টশিল্পে ব্যবসায়ীসহ অন্যন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুসম্পর্কসহ আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কোনো কাজে না জড়ানোয় সাভারে ভোটারদের একটি অংশের কাছে জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ সকল কারণে এনামুর রহমান নির্বাচনে জয়ী হবেন বলে মনে করছেন তার সমর্থকরা।
এনামুর রহমানের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে জড়িত তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফখরুল আলম সমর বলেন, এনামুর রহমান একজন শান্তিপ্রিয় মানুষ। প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে সভারবাসীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ঝুঁট ব্যবসা, জায়গা দখল এমন কোন প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডে কখনোই তার মদদের অভিযোগ উঠেনি। দলমত নির্বিশেষে সকলেই তাকে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবেই জানেন চিনেন। এসব কারণে তিনি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
মন্তব্য করুন