এস এম তারেক, এইচএসসি পাস করে স্নাতকে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন। মাটি ছাড়াই উন্নত জাতের সবজির চারা উৎপাদন করে এলাকায় হয়ে উঠেছেন আলোচিত। তারেক মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা গ্রামের মো. জিল্লুর রহমানের ছেলে।
ছোটবেলা থেকেই অধ্যবসায়ী এবং পরিশ্রমী তারেক স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা হওয়ার। পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষক বাবাকে সহযোগিতা করেন কৃষি কাজে। ইউটিউবে মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। এখন নিজেই দেড় বিঘা জমিতে মাটি ছাড়া সবজির চারা উৎপাদন শুরু করেছেন।
সরজমিনে পরিদর্শনে গেলে তারেক বলেন, মাটি ছাড়াই উন্নত জাতের সবজির চারা উৎপাদন করছি। এগ্রো ওয়ান’ নামের একটি কৃষিবিষয়ক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ চাই। সেখানে প্রশিক্ষণ নিই। এরপর তারাই উন্নত জাতের বীজ ও চারা উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে দেন। আধুনিক এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনে মাটির পরিবর্তে কোকোপিট (নারকেলের ছোবড়া) ও প্লাস্টিকের সিডলিং ট্রে ব্যবহার করে বাড়ির ছাদে পরীক্ষামূলকভাবে ছোট নার্সারি করে মাটি ছাড়াই মরিচ, বেগুন ও টমেটোর চারা উৎপাদন করেছি। প্রথম অবস্থায় উৎপাদিত চারা নিজের জমিতে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া বড় পরিসরে নার্সারি বানিয়ে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করার ইচ্ছা আছে আমার।
তিনি আরও জানান, মাটি ছাড়া চারা উৎপাদনের জন্য নারিকেলের ছোবড়া ও ভার্মি কম্পোস্ট দিয়ে তৈরি করা হয় কোকোপিট। পরিমাণমতো সেগুলো গুঁড়ো করে প্লাস্টিকের সিডলিং ট্রেতে বীজ বপন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের বীজের অধিকাংশই চার দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়। ২৫ থেকে ৩০ দিনে চারা রোপণের উপযোগী হয়।
তারেকের বাবা মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করছি। তবে এর আগে আমরা কখনো এভাবে চারা উৎপাদন করতে দেখিনি। ছেলেকে মাটি ছাড়াই চারা উৎপাদন করতে দেখে শঙ্কিত ছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি এই পদ্ধতি অনেক ভালো।’
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাটি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। চলেন একদিন একসাথে পরিদর্শন করে আসি। পরিদর্শনের পরে উদ্যোক্তার কোনোরকম সাহায্য সহযোগিতা লাগলে সেটা অবশ্যই আমরা করব।’
মন্তব্য করুন