দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেছেন আকতারুল ঢালী (৪০) নামের এক ব্যক্তি। দীর্ঘ এক যুগ সংসার করার পর স্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) তার স্ত্রী ওমেনুর বেগমকে পঞ্চমবারের মতো পাঠানো তালাকনামা পেয়ে অবশেষে সেই কাগজে স্বাক্ষর করেন তিনি।
স্বাক্ষরের পরের দিন ২২ ডিসেম্বর মনের আনন্দে তার নিজ বাড়িতে ২০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন আকতারুল। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আকতারুল ঢালী বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের আলতাফ ঢালীর ছেলে।
জানা গেছে, ২০১২ সালে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের প্রসাদনগর গ্রামের ইস্রাফিল ইজারাদারের মেয়ে ওমেনুর বেগমের সাথে দুই পরিবারের সম্মতিতে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আকতারুল।
আকতারুল ও ওমেনুর বেগমের আঁখি মনি (১১) ও আরিফুল ঢালী (৬) নামের একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে তাদের সংসারে নানা বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হতে থাকে। এভাবেই চলতে থাকে তাদের সংসার। প্রায় এক যুগের পথচলায় স্ত্রী নিকট থেকে পাঁচবার তালাকনামা পেয়েছেন তিনি। প্রথম চারবার স্বাক্ষর না করলেও ৫ম বার তিনি তালাক মেনে স্বাক্ষর করে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন।
আকতারুল ঢালীর মা বলেন আমেনা বেগম বলেন, তাকে কখনো অন্যের মেয়ের মতন করে দেখি নাই। সব সময় নিজের মেয়ের চোখে দেখেছি। বারবার চলে যাওয়ার পরেও ছেলেকে ওই বউ আমি ঘরে এনে দিয়েছি। আমার ছেলে এবার এক ব্যক্তি কর্মী উদ্যোগ নিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে ঘরে উঠেছে। আমার ছেলে এবং আমার নাতির জন্য দোয়া করবেন সকলে। প্রতিবেশী কাইয়ুম শেখ বলেন, এমন ঘটনা আগে কখনো আমি দেখিনি। খবর পেয়ে দেখতে এসেছিলাম। তার বউকে ঘরে রাখার জন্য সে অনেক চেষ্টা করেছে বলে জানি।
এ বিষয়ে আকতারুল বলেন, আমি কষ্টের সাথে আনন্দিতও। আমি ২০১২ সালে বিয়ের পর থেকে আমার স্ত্রীর সাথে সংসারে নানা ঝামেলায় জর্জরিত। সে আমার সংসারে থেকেও অনেকবার ছেড়ে চলে গেছে। সে আমাকে এর আগেও চারবার ডিভোর্সের কাগজ আমার কাছে পাঠিয়েছে। আমার দুটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে আমি কোনোদিন সেই কাগজে স্বাক্ষর করি নাই। আমি তাকে অনেকবার বুঝিয়ে সংসারে ফিরিয়ে এনেছি। কিন্তু সে কখনো আমার সংসারে সুখী ছিল না বলে দাবি করে। আমি অনেক নির্যাতন সহ্য করেও সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এবার সে আমাকে পঞ্চমবারের মতো ডিভোর্সের কাগজ বাড়িতে পাঠিয়েছে। আমি আর তার এ নির্যাতন সহ্য করতে রাজি না। তাই আমি তার পাঠানো ডিভোর্সের কাগজে স্বাক্ষর করে দিয়েছি। আমি যেন আমার দুটি সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মতো মানুষ করতে পারি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
মন্তব্য করুন