বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের বাদলপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত মুজিবুর রহমান উপজেলার কাবাই ইউনিয়নের শিয়ালগুনি গ্রামের মৃত জিন্নাত আলি মোল্লার ছেলে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাসের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষসহ দুজন সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, মিলি বেগম নামের এক নারী মহাপরিচালক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর বাদলপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুর রহমান বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। মো. মুজিবুর রহমান নিয়োগের শর্তভঙ্গ করে ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর শিয়ালঘুনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিবন্ধনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে ১২ বছর চাকরি করেন। তার জালজালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি অসুস্থতা দেখিয়ে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। কিছুদিন পরে পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৮ নভেম্বর পূর্বের কলেজের শিক্ষক নিবন্ধনের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল বাদলপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিয়ালঘুনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, ইংরেজিতে মাস্টার্স দ্বিতীয় বিভাগে পাস করার কথা থাকলেও তৃতীয় বিভাগে পাস করে তিনি সার্টিফিকেটে জালিয়াতির মাধ্যমে দ্বিতীয় বিভাগ তৈরি করে কলেজে যোগদান করেন। ওই কলেজে যোগদান করে শিক্ষক হিসেবে যে নিবন্ধন পেয়েছেন তা সম্পূর্ণ অবৈধ। সেই অবৈধ নিবন্ধন দিয়ে বাদলপাড়া স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ নেওয়ায় কলেজ থেকে চাকরিচ্যুত করে তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারী মিলি বেগম।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুকলা রানী হালদার কালবেলাকে জানান, বাদলপাড়া কলেজের অধ্যক্ষ মো. মুজিবুর রহমানের বিষয়ে তদন্ত শেষ করেছি। অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দু-একদিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠানো হবে।
সার্টিফিকেট জালজালিয়াতি করে মুজিবুর রহমানের চাকরি নেওয়ার বিষয়ে বাদলপাড়া স্কুল ও কলেজের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সাবেক কমিটি থাকতে নিয়োগ পেয়েছেন, অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি সাবেক কমিটি জানে। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই, আর সার্টিফিকেট যদি জাল-জালিয়াতি করে চাকরি নিয়ে থাকেন দায়ভার তার।
এ বিষয়ে বাদলপাড়া স্কুল ও কলেজের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
মন্তব্য করুন