বরিশালে ৫ দিন ধরে গোখরা সাপ পালন করছেন নগরীর এক চা বিক্রেতা। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নগরীর রুপাতলী এলাকায় মোল্লা বাড়ির রান্না ঘর থেকে গোখরা সাপটি ধরা হয়।
চা বিক্রেতা মজিবুল হক জানান, রুপাতলীর মোল্লা বাড়িতে সুমন মোল্লার রান্না ঘরে লাকড়ির মধ্যে বাচ্চা নিয়ে অবস্থান করছিল সাপটি। খবর পেয়ে তিনি রান্নাঘর থেকে গোখরা সাপটি ধরেছেন। তবে বাচ্চাগুলো অন্যত্র চলে গেছে। সাপটি তিন হাত লম্বা। সাপটি বর্তমানে তার হেফাজতে রয়েছে।
তিনি জানান, নগরীর কালিজিরা অ্যাপোলো হাসপাতাল গলিতে তার চায়ের দোকান রয়েছে। শখের কারণে তিনি সাপ ধরেন। কয়েক দিন পর আবার ছেড়ে দেন। শখের কারণেই এ সাপটি ধরেছেন। শখ মিটে গেলে আবার ছেড়ে দেবেন।
তিনি আরও জানান, সাপটিকে মাছ খাওয়ানো হচ্ছে। মাঝে মাঝে সাপটিকে বের করে রোদে রাখা হচ্ছে। এর আগেও তার ধরা সাপকে নিজেই খাইয়ে দিয়েছেন। সাপ নিজে খায় না। তাকে খাইয়ে দিতে হয়।
সুমন মোল্লা জানান, সাপটি তাদের রান্না ঘরে ডিমে তা দিচ্ছিল। পরে বাচ্চা ফুটেছে। সাপটি দুর্বল থাকায় সহজে ধরা গেছে। পরে সাপটি চা দোকানি মজিবুল হক নিয়ে গেছেন। সাপটি তার হেফাজতে রয়েছে।
উপকূলীয় বনাঞ্চল বরিশালের বন সংরক্ষক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ খান বলেন, এভাবে বিষধর সাপ পালনের সুযোগ নেই। কোনো ধরনের সাপ পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে বন্যপ্রাণী দমন ইউনিটকে অবগত করতে হবে, তারা এসে সেটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে।
তবে বরিশালে এ বিভাগের কোনো কার্যালয় নেই বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, গোখরা দেশের সর্বত্রই দেখা যায়। সাধারণত বসতবাড়ির আশপাশে, ছোট ঝোপঝাড়, ইঁদুরের গর্ত বা পুরাতন ভবন বা ইটের ফাঁকফোকরে সাপটি বাস করে। কিছুটা ধূসর বাদামি বর্ণের এই সাপটি লম্বায় প্রায় দেড় থেকে দুই মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। দ্রুত চলাফেরা ও সাঁতার কাটায় এরা খুবই দক্ষ। সাপটি ব্যাঙ, গিরগিটি, ছোট পাখি ছাড়াও ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ খেয়ে কৃষকের উপকার করে, যা কৃষকের শস্যভাণ্ডার পূর্ণ করতে সাহায্য করে। আর এতে খাদ্যশৃঙ্খলেও সুস্থতা থাকে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণত বর্ষাকালে (মার্চ থেকে জুলাই) একটি মা সাপ ১২ থেকে ৩০টি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা হতে প্রায় ৬০ দিন সময় লাগে। এই সাপের বিষ নিউরোটক্সিন প্রকৃতির, যা দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ও স্নায়ুতন্ত্রকে অকেজো করে দেয়।
মন্তব্য করুন