সিলেটের উদ্ধার হওয়া একটি মেছো বিড়াল বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছে সিলেট জেলা পুলিশ। সোমবার (০৬ নভেম্বর) সকালে বিশ্বনাথ পৌরসভাস্থ সুড়িরখাল গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা মেছো বিড়ালটি আটক করে।
খবর পেয়ে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং মেছো বিড়ালটিকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। উদ্ধার হওয়া মেছো বিড়ালটি যেন প্রকৃতির নিরাপদ আশ্রয় লাভ করতে পারে সেজন্য বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বন বিভাগের পক্ষে বিরেশ চন্দ্র কর মেছো বিড়ালটি গ্রহণ করেন। এটি খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলা পুলিশের তৎপরতায় গোয়াইনঘাটে উদ্ধার হওয়া বিশাল আকৃতির একটি অজগর সাপ বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং সেটি খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, প্রাণীটির প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল (Fishing Cat)। কিন্তু অনেক এলাকায় এটিকে মেছোবাঘ নামেও ডাকে। বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না, বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে উপকারী এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
জোহরা মিলা আরও বলেন, ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতিকরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মন্তব্য করুন