টাঙ্গাইলে যমুনায় ভাঙনের শিকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ইউনিয়নের শতশত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। বন্যায় পানি বাড়তে শুরু হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনের শিকার হয়। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি যমুনা নদীর গর্ভে বিলিন হচ্ছে। যদিও ভাঙনরোধে নদী পাড়ে জিও ব্যাগও ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় তিনটি ইউনিয়ন মধ্যে রয়েছে সলিমাবাদ, ভারড়া ও দপ্তিয়র ইউনিয়ন। সলিমাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া সলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন স্কুলের অর্ধেক অংশ ভেঙে পড়েছে। এতে নতুন ভবনও ভাঙনের মুখে। এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি গত মাসের ৩ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার নজরে আনার জন্য লিখিত আবেদন দেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরই নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভাঙনে শত শত ঘরবাড়ি যমুনার বুকে চলে যায়। এগুলো হচ্ছে সলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইসকা মাইঝাইল, খাস ঘুনিপাড়া, চর সলিমাবাদ ও ভুতের মোড়, ভারড়া ইউনিয়নের শাহজানি, মারমা ও উলাডাব এবং দপ্তিয়র ইউনিয়নের নিশ্চিতপুর, কাটি নিশ্চিতপুর ও বাঁক কাটারি। কয়েক বছরে এসব এলাকার সহস্রাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আখিরুল জানান, সলিবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ভুতের মোড় পর্যন্ত এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্কুলের অর্ধেক প্রায় নদীতে চলে গেছে।
সলিবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, কয়েকদিন আগে ভাঙনে বিদ্যালয়ের টয়লেট ও স্কুল ভবনের এক কক্ষ যমুনার পেটে চলে গেছে। বিদ্যালয়ের সরাঞ্জামগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না। স্থায়ী সমাধানের জন্য বেড়িবাঁধ ও জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানান তিনি।
সলিমাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহীদুল ইসলাম অপু জানান, প্রায় পাঁচ বছর ধরে সলিমাবাদে যমুনার ভাঙনে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ পর্যন্ত চার শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি যমুনায় চলে গেছে। সলিমাবাদ পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিলীনের পথে। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও এমপি আহসানুল ইসলাম টিটু এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে উপমন্ত্রী দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিকভাবে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। স্থায়ী সমাধানের জন্যও পরিকল্পনা আছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, নাগরপুরে ভাঙনরোধে ৩০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এ বর্ষায় স্থায়ীভাবে কোনো সমাধান করা যাচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী জেলা যমুনা নদীর পশ্চিম পাড় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে প্রকল্প চলমান রয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা আছে।
মন্তব্য করুন