উপকূল (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পেকুয়ায় হামুনের তাণ্ডবে ২ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত 

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত পেকুয়ার একটি বাড়ি। ছবি : কালবেলা
ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত পেকুয়ার একটি বাড়ি। ছবি : কালবেলা

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে হামুনের আঘাতে প্রায় দুই হাজার বাড়িঘর ভেঙে গেছে। গাছপালা উপড়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার। গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙে সড়কের উপড়ে পড়ায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট। তবে কোনো ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

উপজেলার উপকূলীয় এলাকা উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, উজানটিয়ার খাতুনে জান্নাত ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ৩টি ভবনের টিনের ছাদের সম্পূর্ণ উড়ে গেছে। একই পরিস্থিতি ঘটেছে মগনামার শাহ রশিদিয়া আলিম মাদ্রাসাতেও। এ মাদরাসার একটি একাডেমিক ভবনের সবগুলো টিন উড়ে গিয়ে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে পাঠদানে।

খাতুনে জান্নাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, তিন মাস আগেই সংস্কার করা হয়েছে পুরো মাদ্রাসার সবকটি ভবন। হামুন ঝড়ে ছাদের সকল টিন উড়ে গেছে। দুর্গাপূজার ছুটির পর আজ (বৃহস্পতিবার) মাদ্রাসার পাঠদান ফের শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা তা করতে পারিনি।

মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী বলেন, তার ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। বাতাসে ৪২টি বাড়ি সম্পূর্ণ উড়ে নিয়ে গেছে। শতশত গাছপালা ভেঙে উপড়ে পড়েছে সড়কে। তবে লোকজন দিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা গাছপালা সরিয়ে ফেলেছি।

উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন আমার ইউনিয়নে তাণ্ডব চালিয়েছে। ২৫০টি কাঁচা বাড়ির চিহ্নও রাখেনি। প্রায় ২০০ ঘরবাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। হেলে পড়েছে অসংখ্য খুঁটি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত তিন টন চাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে বিলি করেছি।

এদিকে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়া এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় ঝড়ের পর থেকে পুরো উপজেলায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন।

কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পেকুয়া সাব-জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি হামুন ঝড়ে ভেঙে গেছে। হেলে পড়েছে ৭০টি। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সংযোগের ২০০ মিটার তার ছিড়ে গেছে।

পেকুয়া সাব-জোনাল অফিসের এজিএম দীপন চৌধুরী বলেন, হামুন ঝড়ে পেকুয়ার বিদ্যুৎ ব্যবস্থার যে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছি আমরা। দ্রুত সবকিছু স্বাভাবিক করতে অতিরিক্ত ৫০ জন জনবল একসাথে কাজ করছে। তবে বৈদ্যুতিক সংযোগ চালু করতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগতে পারে।

ঝড়ে পেকুয়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সহায়তায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ১৬ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার আবু তাহের।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ১৬ টন চালের মধ্য থেকে উজানটিয়া ও মগনামা ইউনিয়নের জন্য তিন টন করে ও অন্যান্য প্রতি ইউনিয়নের জন্য দুই টন করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একটি তালিকা আমরা প্রস্তুত করেছি। এদের সহায়তার জন্য প্রস্তাবনাটি জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৈরুত বিমানবন্দরের পাশেই ইসরায়েলি তাণ্ডব

সিলেটে রায়হান হত্যা মামলায় ২ যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

৫ অক্টোবর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

রোহিঙ্গা সংকট একটি তাজা টাইম বোমা : ড. ইউনূস

বন্যার পানিতে মায়ের লাশের সঙ্গে ভেসে এল শিশু

লেবাননের যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ, পিছু হঠল ইসরায়েলি বাহিনী

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জানাজা কখন-কোথায়?

আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসবে বিএনপি

সকালের মধ্যে দেশের ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস

৫ অক্টোবর : নামাজের সময়সূচি

১০

আজও কি দিনভর সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে?

১১

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

১২

বিদ্যালয়ে কোনোরকম উচ্ছৃঙ্খলতা ছিল না

১৩

নারায়ণগঞ্জে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় কাপড় জব্দ

১৪

ইদানীং শিক্ষকদের এক ধরনের হেয় করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে

১৫

মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা খুব জরুরি

১৬

কক্সবাজার সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রদল নেতা নিহত

১৭

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে বন্ধন সেটি ছিন্ন হয়ে গেছে

১৮

হত্যা মামলায় রসিকের সাবেক কাউন্সিলর মিলন গ্রেপ্তার

১৯

শিক্ষকদের শিক্ষাবাণিজ্য থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

২০
X