খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তৃণমূলে সাড়া জাগিয়েছে এসিল্যান্ডের সৃজনশীল উদ্যোগ ‘ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবা’ কার্যক্রম। কাঙ্ক্ষিত ভূমি সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতে এমন অভিনব উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এ কার্যক্রম চলমান রাখার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে এ কার্যক্রমের ফলে অফিসে না গিয়েই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়ায় সময় ও অর্থ দুটোই বেঁচে গেছে।
জানা গেছে, ‘মাটির কাছে, মানুষের কাছে’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে গত ৭ অক্টোবর ‘ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবা’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের ১৫ দিনে মাটিরাঙ্গার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অফিস পরিদর্শন করেছেন মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাহ উদ্দিন। এ সময় তিনি নামজারি শুনানি ও রেকর্ড সংশোধনসহ সব ধরনের ভূমি সেবা প্রদান করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৫ দিনে ‘ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবা’ প্রদানকালে ৫১টি নামজারি শুনানি করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরেজমিনে রেকর্ড/খতিয়ান সংশোধন করা হয়েছে ৫০টি, জমাবন্দির নকল প্রদান করা হয়েছে ৪১ জনকে। এ ছাড়া একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে পাঁচ শতাধিক গণশুনানি ও জমিসংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধান করেছেন মো. মেজবাহ উদ্দিন।
ভ্রাম্যমাণ ভূমিসেবা উদ্যোগটি এরই মধ্যে প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। ভূমি অফিস ও সেবা নিয়ে স্থানীয় সেবাগ্রহীতা মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আগে আমরা যে কোনো সেবার জন্য অফিসে গিয়ে ঘুরতাম। এখন ভূমি অফিসই মানুষের কাছে এসেছে।’
ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবা কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে স্থানীয় মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘এ কাজের ফলে আমাদের অর্থ ও সময় দুই-ই বাঁচবে। দালালের খপ্পরে পড়তে হবে না।’
এদিকে ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামসুল হক। তিনি সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণে বিচক্ষণতাপূর্ণ সৃজনশীল ভাবনাশক্তি প্রয়োগের জন্য সরকারের এসিল্যান্ডকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ সেবা চলমান রাখার দাবিও জানিয়েছেন মেয়র। ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবার ফলে ভূমিসংক্রান্ত কাজের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে জানিয়ে তিনি বলেন বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
পাহাড়ের দুর্গমতার কারণে যাতায়াতে কিছু জটিলতা হয় সেজন্য সাধারণ মানুষের কাছে দিতে এটি একটি অনন্য উদ্যোগ জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেইজি চক্রবর্তী বলেন, ‘সাপ্তাহের একদিন হলেও জনগণের দোড়গোড়ায় গিয়ে ভূমি অফিস ভ্রাম্যমাণ সেবা প্রদান করবে।’
২০৩০ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট ভূমি সেবা নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবার মধ্য দিয়ে সবুজ পাহাড়ে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।’
তিনি বলেন, ‘দালালের দৌরাত্ম্য ও নাগরিকদের খরচ কমাতে জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছে দিতে এ ভ্রাম্যমাণ ভূমি সেবাটি চালু করা হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
মন্তব্য করুন