শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানের সার্বজনীন মন্দিরের সামনে জমে উঠেছে পূজার মেলা। গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মেলাটি শেষ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে। দুর্গাপূজায় চা শ্রমিকদের এ মেলা বাড়তি আনন্দ দেয়।
রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর মালনীছড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণের মেলায় গিয়ে দেখা যায়, দেবীদর্শনের পাশাপাশি ভক্তরা ভিড় জমাচ্ছেন মেলাতে। মেলার প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে দুই ধারে বাহারি পণ্যের স্টল। নাগরদোলা, চরকিসহ রয়েছে শিশু-কিশোরদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা। তা ছাড়া খাজা-গজা, জিলাপিসহ রকমারি খাবার তো আছেই। পাশাপাশি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে মন্ডা-মিঠাই, নিমকি, লাড্ডু, রসগোল্লাসহ নানা রকম মিষ্টিজাতীয় খাবার। শুধু তাই নয়, মাটির তৈজসপত্রের পাশাপাশি প্লাস্টিকের নানা ধরনের খেলনা, মেয়েদের জন্য বাহারি কসমেটিকসের দোকানও বসেছে মেলায়।
মেলার দক্ষিণ পাশে নাগরদোলা ও চড়কির জায়গা করা হয়েছে। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল নাগরদোলার সামনে লম্বা লাইন। সেই নাগরদোলায় চড়তে পেরে আনন্দে আটখানা শিশুরা। এক শিশু নেমে এসে বলল, ‘এখানে চড়তে খুব মজা।’ মেলায় সকাল থেকে তেমন একটা ভিড় না থাকলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে লোকসমাগম বাড়ে।
মেলায় কথা হয় ফুচকা বিক্রেতা আব্দুর রহিম ও গৌতমের সঙ্গে। তারা জানান, ক্রেতাদের সামনেই বানানো হচ্ছে খাবারগুলো। গরম গরম এসব টাটকা জিনিসপত্র পেয়ে তারা অত্যন্ত খুশি। সেই সঙ্গে বিক্রি নিয়ে তারাও সন্তুষ্ট।
সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অনেকে ঘুরতে এসেছেন মেলায়। তাদের মধ্যে কথা হয় নূর মোহাম্মদ, মামুন হোসেন ও সুমনের সঙ্গে। তারা জানান, সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে চোখে পড়ে মেলাটি। বৈশাখ আর পূজা ছাড়া মেলার আমেজ তো পাওয়া যায় না। মেলায় ঘুরে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনলেন তারা।
এই পূজার মেলা বসে প্রায় এক যুগেরও অধিক সময় ধরে। মালনীছড়া সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি হৃদেশ মুদী বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে এই পূজা হয়ে আসছে। চা শ্রমিকদের চিত্তবিনোদনের জন্য মেলা আলাদা কদর পেয়েছে। এই মেলা আমাদের উৎসবের আমেজ আরও বাড়িয়ে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার বিজয়া দশমী। দেবী দুর্গা বিদায় নেবেন। মেলাও ভাঙবে। আবার আগামী বছর দেবীর আগমনের মধ্য দিয়ে মণ্ডপের আশপাশে বসবে মেলা।’
মন্তব্য করুন