‘হয় ওসি বিয়ে করবে, না হয় আমাকে মেরে ফেলবে’- এমন দাবিতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বরখাস্ত এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক নারী উদ্যোক্তা।
আজ বুধবার সকাল থেকে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের বানিয়াবহু গ্রামের মৃত মান্নান চৌধুরীর ছেলে পুলিশ পরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) সেলিম রেজা চৌধুরীর বাড়িতে তিনি অনশন শুরু করেছেন। নারী উদ্যোক্তার বাড়ি নাচোল থানার খোলসী গ্রামে। সেলিম রেজা চৌধুরী দীর্ঘদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় ওসির দায়িত্ব পালন করেন।
অনশনে থাকা ওই নারী উদ্যোক্তার দাবি, ২০২০ সালে নাচোল থানার ওসি থাকার সময় সেলিম রেজার সাথে তার পরিচয় হয়। মামলা সংক্রান্ত কাজে আসা-যাওয়ার সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। এরপর সেলিম রেজা তাকে নাচোল শহরের নাখেরাজপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সময় তাকে হোটেলে নিয়েও শারীরিক সম্পর্ক করেছেন ওসি সেলিম। পরবর্তীতে সেলিম রেজা বদলি হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বিশেষ শাখা ও ভোলাহাট থানায় থাকার সময়ও তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল।
নির্যাতিত নারী উদ্যোক্তা আরও বলেন, সম্পর্কের শুরুতেই সেলিম রেজা নিজের স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে জানিয়ে তাকে বিয়ে করতে চান। কিন্তু পরে জানতে পারেন তিনি স্ত্রীকে ডিভোর্স দেননি। বিষয়টি স্ত্রী জানার পর ওসি সেলিম যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় যান উদ্যোক্তা। এ সময় তাকে বেধড়ক মারধর করে ও পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করায়। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ভোলাহাট থানায় গেলে ওসি নিজে, কনস্টেবল দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করান। তারপরও বিয়ের দাবিতে অনশন করলে নির্যাতিত নারী উদ্যোক্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। ৭ দিন কারাগারে থাকার পর মুক্ত হয়ে থানায় জব্দ করা আমার ফোন ফেরত নিয়ে দেখি আমাদের কথোপকথনের অডিও ও ভিডিও সবকিছু ডিলিট করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন- ‘হয় ওসি বিয়ে করবে, না হয় আমাকে মেরে ফেলবে।’ এ বাড়িতে থেকে কোথাও আমি যাব না।
সেলিম রেজা চৌধুরীর বড় ভাই আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, এই মেয়েটা আমার ভাইয়ের জীবন শেষ করে দিয়েছে। ওর অভিযোগের কারণে ভাই ওসি পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছে।
তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি বিয়ের দাবিতে এক নারী অনশনে বসেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
মন্তব্য করুন