সিলেটে মোবাইল বিক্রির কথা বলে ঘরে ফেরেননি শাহপরাণ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন আরাফাত হামিম। এ ঘটনায় বুধবার (১১ অক্টোবর) হামিমের বাবা মোগলাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
মোগলাবাজার থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিখোঁজ হামিম (১৯) দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর শেখপাড়া এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে। হারানোর সময় তার পরনে ছিল কালো টি-শার্ট, পরনে জিন্সপ্যান্ট, গায়ের রং শ্যামলা, মাথার চুল কালো, উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি।
গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে দক্ষিণ সুরমার কদমতলীতে মোবাইল বিক্রি করবে বলে ঘর থেকে বের হয়ে যায় হামিম। এরপর থেকে তার খোঁজ নেই।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো.ইয়ামিন আরাফাত হামিম চলতি বছর শাহপরাণ সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনে আবেদন ও বিকাশ এজেন্টে হিসেবে ব্যবসা করত। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্রীরামপুরের তাদের বাসা থেকে বের হয়। এ সময় তার মাকে মোবাইল ফোন বিক্রি করতে কদমতলী যাচ্ছে বলে জানায়। পরে রাত ১০টার দিকে বাবলু নামে তার এক বন্ধুকে কল দিয়ে জানায় তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যাবে না। কারণ ফোন বিক্রি করে দেবে। তারপর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতেই হামিমের বাবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবগত করেন এবং বুধবার সকালে থানায় ছেলে নিখোঁজ বলে সাধারণ ডায়েরি করেন।
হামিমের বাবা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘রাত থেকে ছেলেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করছি কোথাও কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। ছেলের সন্ধান না পাওয়া তার অসুস্থ মা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ছেলে কোথায় আছে কেউ কিছু বলতেও পারছে না। আমার ছেলেকে বোধহয় অপহরণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বুধবার দুপুর ২টা ২৩ মিনিটের সময় হামিমের মোবাইল থেকে আমাদের ফোনে দুবার কল আসে। প্রথমবার ১০ সেকেন্ডের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আরও ১০ সেকেন্ড পর আরেকটি কল আসে। তখন তার সঙ্গে ৩৬ সেকেন্ড কথা কথা হয়।’
ছেলের সঙ্গে কথোপকথন নিয়ে জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে আমাকে বলেছে, আব্বু আমি কিছুই দেখতেছি না। আমাকে ৪ জন একটি অন্ধকার ঘরে নিয়ে এসে আটকে রেখেছে। বলা হচ্ছে এখানে পচে মরব।’ এই কথা বলে আমার ছেলের ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। আমার ছেলেও কোনো ধরনের নেশাদ্রব্য পান করে না। ছেলের সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা থেকে থাকলে তা আমার জানা নেই। তার ফোনে লাখ খানেক টাকা আছে।’
এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়া ইয়ামিনের বাবা থানায় একটি জিডি করেছেন। তাকে উদ্ধার করতে আমাদের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।’
মন্তব্য করুন