আগাম জাতের চাষের আলুর ও পেঁয়াজ বীজ কিনতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের কৃষকরা। গত মৌসুমের চেয়ে এবার দুই-তিন গুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে আলু পেঁয়াজ বীজ। বেশি দামের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে কৃষকরা জানান।
চলতি মৌসুমের আগাম জাতের ৫০ কেজি ওজনের ক্যারেজ আলু বীজ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। যা গত মৌসুমে বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা দামে। আর শীতকালীন চাষের জন্য পেঁয়াজ বীজ এ মৌসুমে বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৪ হাজার ৫০০ টাকা থেকে আকার ভেদে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।
জয়পুরহাট জেলায় দুই দফায় আলু চাষ হয়ে থাকে। প্রথম দফায় জেলার বেশ কিছু এলাকার ভিটে মাটিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়ে থাকে। কার্তিক মাসে আগাম জাতের ক্যারেজ আলু বীজ কিনে তা ভিটে মাটিতে আবাদ করেন কৃষকরা। আর দ্বিতীয় দফায় আমন ধান কাটার পর ব্যাপকহারে লাল গুটি আলু ও হল্যান্ড জাতের আলু চাষ করা হয়ে থাকে।
জেলার বিভিন্ন গ্রামের ভিটে মাটিতে আগাম (আগুর) জাতের আলু ও শীতকালীন পেঁয়াজ আবাদ করে থাকেন এলাকার কৃষকরা।
ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন, ওমর আলী, সেলিম মিয়া জানান, গত বছর আগাম আলু বীজ ও পেঁয়াজ বীজের দাম এবারের তুলনাই খুব কম ছিল। এবার আকাশছোঁয়া দাম। তার সঙ্গে সার, কীটনাশক, মজুরির দামও বেড়েছে। এবার অনেকেই আলু চাষ কমিয়ে দিবেন অর্থ সংকটের কারণে। গতবার পেঁয়াজ বীজের দাম ছিল ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ। এবার সাড়ে চারশ টাকা মণ। আলু বীজের দামও দ্বিগুণ।
আমিড়া গ্রামের কৃষক হাফিজার রহমান জানান, খাবার আলু ৫০ টাকা কেজি ও পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা। আলু পেঁয়াজ বীজের দাম মারাত্মক বেশি হওয়ায় খরচে কুলাতে না পারায় অনেকে অন্য ফসল চাষ করবেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, জেলায় এবার আগাম জাতের আলু চাষ হবে ৬ হাজার হেক্টর। আর শীতকালীন পেঁয়াজ প্রায় ১ হাজার হেক্টর। আলুর দাম এবার অনেক বেশি। আগাম জাতের আলু চাষ করে কৃষকরা প্রতি বছর ভালো লাভ করেন। তাদের চাষ খরচ বেশি হলেও কৃষক আলু পেঁয়াজ চাষ করবেন। তারা আগাম ফসলে লাভ পান ভালো।
মন্তব্য করুন