রংপুরের তিস্তা নদীদে হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসা এই পানিতে রংপুরের কাউনিয়া ও গংগাচড়া উপজেলার কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। এদিকে গংগাচড়া তিস্তা পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে সকাল ৯ টায় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। তবে প্রায় দুই ঘন্টা থেকে কাউনিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে তিস্তা নদীর পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯ টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির হয়েছে। ইতোমধ্যে কাউনিয়ার ঢুসমারা, গনাই, হয়বৎ খাঁ, আজম খাঁর চড় প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার এই পূর্বাভাস পাওয়ার পর বুধবার থেকে রংপুরের গংগাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলা প্রশাসন তিস্তা নদীবেষ্টিত চর ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে দ্রুত উঁচুস্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় মসজিদ থেকেও চলছে মাইকিং। সেই সাথে বিভিন্ন বিদ্যালয় প্রস্তুত করা হয়েছে।
কাউনিয়া বালাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, ‘বালাপাড়া ইউনিয়নের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক আছি। যখন যেটা প্রয়োজন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, ‘তিস্তার গংগাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচে দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে লক্ষীটারী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় লক্ষিটারীর পূর্ব অংশ প্লাবিত হয়েছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা রয়েছেন। ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বুধবার থেকে আমরা চরের মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে অনুরোধ করছি। বন্যায় যেন মানুষের জানমালের ক্ষতি না হয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করছে। বন্যা স্থায়ী হলে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বন্যা শেষে ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্নবাসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।’
অন্যদিকে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক বলেন, ‘কাউনিয়া পয়েন্টে সকাল ৯ টায় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ঢুস মাড়ার চড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেই সাথে কৃষি জমিতে পানি উঠেছে। তবে এখনও বাড়ি ঘরে কোথাও পানি উঠেনি। কাউনিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আমাদের সকল ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।’
মন্তব্য করুন