আজকে ভূ-রাজনীতিতে বিএনপিকে ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আজকে ৫ বছর ক্ষমতায় আছি। এখন বিএনপি বলছে, আওয়ামী নির্বাচন করতে পারে। কিন্তু তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেবে না। এত সহজ না! আপনারা ভাবছেন, এভাবে লাফালাফি করে আপনারা ক্ষমতায় যেতে পারবেন? যারা বাতাস দিয়ে দিয়ে আপনাদের লাফাচ্ছে, তারা আপনাদের দুধ দেবে না। ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা যেমন দুধ পায় না, আপনারাও দুধ পাবেন না। সুতরাং এত লাফালাফি করে লাভ নেই।’
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহী নগরীর পাঠানপাড়া শিমুলতলা মোড়ে অনুষ্ঠিত রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন এসব কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৪ সালেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তখন বলেছিল, নির্বাচন করলেও এক মাস টিকবে। আমরা ৫ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। ২০১৮ সালেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন করার পর বিএনপি বলেছিল, টান দিয়েই ফেলে দেব। খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও তার নির্দেশনায় তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আন্দোলন করেছিল। টান দিতে গিয়ে তারা রশি ছিড়ে পড়ে গেছে।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি কী বলছে? ফাইনাল খেলা আগামী (অক্টোবর) মাসে। আমরা ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যুবলীগ প্রস্তুত আছে। আমরাও ফাইনাল খেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি, কোথায় খেলবেন বলুন, আমরা সেখানে যাব। আমরা সেই ফাইনাল খেলায় আওয়ামী লীগ যাবে না, যুবলীগকে পাঠাবো। আমরা আমাদের ফার্স্ট টিম পাঠাবো না, সেকেন্ড টিম পাঠাবো। প্রয়োজনে মহিলা আওয়ামী লীগকেও পাঠাবো। ওদের সাথে আগে খেলেন। তারপর আওয়ামী লীগ আপনাদের সাথে খেলবেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, ফাইনাল খেলার আগে আপনাদের খেলোয়াড়রা, আপনাদের দলে থাকে কিনা। নাকি দল বদল করে ফেলে সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন। ফাইনালের আগেই যদি আপনাদের খেলোয়াড়রা দল বদল করে ফেলে তাহলে ফাইনাল খেলতে পারবেন না।’
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন বিশ্ব বেহায়ারা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে টেনে ধরতে চায়। আর বিএনপি তাদের প্রেরক হিসেবে দেশকে বিশ্ব বেহায়াদের হাতে তুলে দিতে চায়। দেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তানের পর্যায়ে নিযে যেতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ হয়, তখনো দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তখন ভারত মহাসাগরে সপ্তম নৌবহর এসে চোখ রাঙ্গিয়েছিল। সেই চোখ রাঙানির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বুকের রক্ত ঢেলে সমস্ত ষড়যন্ত্র-চোখ রাঙানিকে উপড়ে ফেলে দেশকে স্বাধীন করেছিল। আজকেও কেউ কেউ চোখ রাঙায়।’
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জেলা যুবলীগ সভাপতি মো. আবু সালেহ’র সঞ্চালনায় সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ; আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, জেলার সভাপতি শ্রী অনিল কুমার সরকার, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াদুদ দারা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-০৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ডা. মো. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ মার্চ মহানগর এবং ১৫ মার্চ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ইউনিটের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।