নেত্রকোনার মদনে সাত গ্রামের লোকজনের মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নায়েকপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের পাশের কৃষিজমিতে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন।
আহত রফিক (৩৫), গণি মিয়া (৬৫) ও সিয়ামের (৪৫) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত আছিরুল, নয়ন, রমজান, মনিরকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত পারভেজ, ইনছান, নিজাম উদ্দিন, হারুন, মাছুম আলী, ইরান উদ্দিন ও সেলিমকে পাশের উপজেলা তাড়াইলের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেছেন স্বজনরা। বাকিরা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক, ওষুধের দোকানেসহ বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নোয়াগাঁও, পাছআলমশ্রী, বাউশা, তালুককানাই (একগ্রুপ) গ্রামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পাশের গ্রাম আলমশ্রী, দেওয়ানপাড়া ও মাখনার বিরোধ চলে আসছে। জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নায়েকপুর ইউনিয়নে এ দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এলাকায় বার বার উত্তেজনা দেখা দেয়। এর আগে দুপক্ষের মধ্যে কয়েকটি মারধরের ঘটনাও ঘটে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুপক্ষের বিভেদ নিষ্পত্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সবশেষ মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষের হাজার হাজার লোক সংঘর্ষে জড়ান।
এ ব্যাপারে মদন থানার ওসি মুহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নায়েকপুর ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে। উপজেলা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতারা এ নিয়ে বারবার পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘নায়েকপুর ইউনিয়নে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিষয়টি সমাধানেরও চেষ্টা করা হয়েছে। এক পক্ষ সাড়া না দেওয়ায় নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’