দামি স্মার্টফোন কেনার টাকা সংগ্রহের জন্য চাচাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এক মাদ্রাসাছাত্র অপহরণ নাটক সাজিয়ে মুক্তিপণ দাবি করায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ার গাবতলী মডেল থানা পুলিশ কথিত অপহৃত ৯ম শ্রেণির ওই মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাইসহ দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।
গাবতলী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোন্নাফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গাইবান্ধার আলতাফুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত রোববার দুপুরে থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে গাবতলী উপজেলার নশিপুর এলাকায় একটি আবাসিক মাদ্রাসায় ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে আসা বই উত্তোলনের কথা বলে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়।
১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে বলা হয়- তার ছেলেকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে। তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে তাকে খুন করা হবে। এরপর থেকে ওই ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। ওই ছাত্রের বাবা বিষয়টি গাবতলী থানায় অবহিত করলে থানা পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল ওই ছাত্রকে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাত ৯টার দিকে বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে কথিত অপহৃত মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার চাচাত ভাই খায়রুল ইসলাম লিমন (২২) এবং মেহেদী হাসান (২২) নামের দুই যুবককে আটক করা হয়।
পুলিশ পরিদর্শক মোন্নাফ আলী আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই মাদ্রাসাছাত্র ও তার চাচাত ভাই লিমন জানায়, ওই মাদ্রাসাছাত্র একটি দামি স্মার্টফোন কিনবে বলে মনস্থির করে। সেই ফোন কেনার টাকা পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে তারা অপহরণের নাটক সাজায়। মুক্তিপণের টাকা থেকে একটি দামি ফোন কেনার পর অবশিষ্ট টাকা তার চাচাত ভাইসহ অপর সহযোগীরা ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্র মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে বগুড়া শহরের তিনমাথা রেলগেটে তার চাচাত ভাইয়ের ছাত্রাবাসে ওঠে। সেখানে আরও দুই-তিনজন ছাত্র মিলে বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা বাজারে গিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রের বাবাকে ফোন করে অপহরণের কথা বলে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর তারা ফোনটি বন্ধ করে ছাত্রাবাসে ফিরে গিয়ে আত্মগোপন করে থাকে।
এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসাছাত্রের বাবা মামলা না করায় আটককৃতদের পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক মোন্নাফ আলী।
মন্তব্য করুন