রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিমানে উঠে যায় জোনায়েদ মোল্লা (১০) নামে এক শিশু। শিশুটি বিমানের ভেতরে করিডোরে হাঁটাচলা করছিল। এ সময় কেবিন ক্রু শিশুটিকে সিটে বসার পরামর্শ দেন। তখন শিশুটি একটি সিটে বসে পড়ে। একপর্যায়ে শিশুটি যে সিটে বসেছিল পাশের সিটের যাত্রী শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলে। কিন্তু শিশুটি তার বাবা-মায়ের বিষয়ে কোনোকিছু বলতে পারেনি। বিমানে উঠতে বোর্ডিং পাস, পাসপোর্ট এবং ভিসা লাগে তুমি কি জানো- এমন প্রশ্নের জবাবে জোনায়েদ বলে, আমি এসব কিছুই জানি না। এর আগে কাছ থেকে কখনো বিমান দেখি নাই। ওইখানে (এয়ারপোর্ট) গিয়ে ভেতরে ঢোকার পর বিমান দেখতে পেয়ে হাঁটতে হাঁটতে বিমানের কাছে গিয়ে উঠে পড়ি।
ঘটনা অনুসন্ধান করে জানা যায়, সে ওই ফ্লাইটের যাত্রী নয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট (কেইউ-২৮৪) পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে উঠে পড়ে সে। পরে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে বিমানবন্দর থানা হেফাজতে রাখা হয়।
কুয়েত এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে উঠে পড়া শিশু জোনায়েদ মোল্লা গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের ইমরান মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় মুকসুদপুর উপজেলাব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়িতে শিশুটিকে একনজর দেখতে প্রচুর লোকজনের সমাগম হচ্ছে।
শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, আমার ভাতিজা জোনায়েদ মোল্লা ছোটবেলা থেকে খুবই দুরন্ত। তাকে হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে সে বারবার পালিয়ে যায় বলে তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু জোনায়েদ বাড়ি থেকে মাঝেমধ্যেই হারিয়ে যায় আবার একা একাই ফিরে আসে। গত এক সপ্তাহ আগে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বিমানে উঠে পড়ার ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের ফোন করা হলে তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে গতকাল রাতে নিয়ে আসছি। বর্তমানে নিজ বাড়িতেই আছে।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ওসি আজিজুল হক মিয়া জানান, শিশুটি থানা হেফাজতে ছিল। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায়। তার অভিভাবককে খবর দেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার সময় শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
মুকসুদপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিমানবন্দর থানা থেকে আমাদের থানায় ফোন করা হলে আমরা তার পরিবারের খোঁজ করে তার পরিবারকে সংবাদ দেই। খবর পেয়ে তারা তাকে বিমানবন্দর থানা থেকে নিয়ে আসে। বর্তমানে শিশুটি তার বাড়িতেই আছে।
মন্তব্য করুন