গাংনীর চৌগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রকিব শিক্ষকতার পাশাপাশি করেন রাজনীতি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, সরকারি চাকরি করলেও পাশাপাশি তিনি বর্তমান সরকারদলীয় সংগঠন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ২৬ নম্বর সদস্য।
নবগঠিত মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রথম পরিচিতি সভাসহ জেলা কমিটির সভা সমাবেশে তার রয়েছে সরব উপস্থিতি। তবে তার দাবি, তিনি নিজে জেলা কমিটির সদস্য নন। একই নামে অন্য এক আব্দুর রকিব জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তবে জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির পরিচিতি সভা ও অন্যান্য সভা সমাবেশে তার সরব উপস্থিতির কারণের কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না। অথচ সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ভঙ্গ করে ওই শিক্ষক আওয়ামী লীগের সদস্য পদ পেয়েছেন।
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে গাংনীর চৌগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রকিব বলেন, ‘এই তথ্য আপনি কোথায় পেলেন? কথাটা সত্য নয়। আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির পরিচিতি সভায় আমি শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক খালেক ভাইয়ের সঙ্গে ছিলাম। ওই দিন অনেকেই ছিল। কমিটির সদস্য গাংনীর থানা পাড়ার রকিব। আমাদের দুজনের নামের মিল আছে বলেই আপনারা এমন ভাবছেন।’
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভুপেশ রঞ্জন রায় বলেন , আব্দুর রকিব যে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং জেলা আওয়ামী লীগের পদে আছে এটা আমার জানা নেই। তবে সরকারি চাকরি করে কেউ কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেন না, এইটা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার পরিপন্থি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ সত্য হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী বলেন, রকিব সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেকের ঘনিষ্ঠ, সেই তাকে জেলা কমিটিতে ঢুকিয়েছে। রকিব চাকরি করে কিনা এবং ঠিক কোন প্রক্রিয়াতে দলের কমিটিতে ঢুকল সেটা আমি জানি না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর মেহেরপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জাকির হোসেনকে মোবাইলে এই ব্যাপারে তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন বলে জানান।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক আব্দুর রকিবের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করে শুধু বলেন, ‘আব্দুর রাকিব স্কুল শিক্ষক, আমি তাকে চিনি।’
মন্তব্য করুন