নোয়াখালীর চাটখিলে সাপেকাটা ভ্যাকসিনের অভাবে নুপুর কর্মকার (৩২) নামে এক সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টায় হরিকৃষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নুপুর কর্মকার চাটখিলের বদলকোট ইউনিয়নের হরিকৃষ্ণপুর গ্রামের কুন্তল কৃষ্ণ কর্মকারের ছেলে। তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন।
পরিবারের লোকজন জানান, রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় বাড়ির দরজায় হাটাহাটি করার সময় বিষধর সাপ নুপুরকে কামড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ভ্যাকসিন না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
নিহত নূপুর কর্মকারের চাচাত ভাই সমীর কর্মকার কালবেলাকে বলেন, জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল সাপেকাটা রোগীর ভ্যাকসিন নাই এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া যাবে না বলে জানানো হয়। পরে রাতেই নুপুরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলা হয়। সেখান নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নূপুরের বড়ভাই রিপন কর্মকার বলেন, বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর নুপুরের মরদেহ চিতায় দাহ করা হয়েছে। সময় মতো ভ্যাকসিন দিতে না পারায় আমার একমাত্র ভাই দুনিয়া থেকে চলে গেছে। এ বিষয়ে আমরা আইনি প্রতিকার চাইব।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সিএ মো. আবদুল মতিন কালবেলাকে বলেন, খবর পেয়ে আজ দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেনসহ অফিসের সবাই গিয়ে নুপুরের মরদেহ দেখে এসেছি। ভ্যাকসিনের অভাবে একটি তাজাপ্রাণ ঝরে গেল বিষয়টি দুঃখজনক।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মোশতাক আহমেদ কালবেলাকে বলেন, রাত ১২টার দিকে রোগীকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে আনা হয়। আমাদের কাছে সাপেকাটা ভ্যাকসিন না থাকায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লায় পাঠানো হয়। সেখানে সে মারা যায়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, আমাদের কাছে সাপেকাটা রোগীর পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুদ আছে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার কালবেলাকে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিয়েছি। রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ ছিল। নোয়াখালীতে ভ্যাকসিন মজুদ আছে কিন্তু আইসিইউ নাই। তাই তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। তারপরও কারো অবহেলা থাকলে তা আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন