মহড়া দিয়ে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ থেকে ফেরদৌস হাসান নামে এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে পায়ের রগ কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ভিকটিম শিক্ষার্থী ফেরদৌস হাসানের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতা রবিন সরদারসহ ২২ জনের নামে বাসন থানায় মামলা করেছেন।
এদিকে গুরুতর আহত ফেরদৌস হাসানকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে তিন থেকে চারটি মোটরসাইকেল, তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি প্রাইভেটকারে ১৫ থেকে ২০ দুর্বৃত্ত চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে আসে। তারা ক্যাম্পাসের সামনে থেকে কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্বের ছাত্র ফেরদৌসকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এসময় ফেরদৌসের অপহরণের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফেরদৌসকে উদ্ধারের দাবি জানান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহানগরের শিববাড়ি হলি ল্যাব হাসপাতালের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেরদৌসকে ফেলে রাখে সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি পদপ্রার্থী রবিন সরদারের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী নাজমা বেগম বলেন, আমার ছেলে ফেরদৌস ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। মামলার আসামি রবিন সরদার বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। এসব কারণে ছেলেকে তার সঙ্গে চালাফেরা করতে নিষেধ করি। রোববার রবিন সরদারের নেতৃত্বে আমার ছেলেকে ভাওয়াল কলেজ থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে আনা হয়। এ খবর পেয়ে আমি ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করি ও বিষয়টি পুলিশকে জানাই। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খবর পাই আমার ছেলেকে গুরুতর অবস্থায় শিববাড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ছেলেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমার ছেলের বাম পায়ের রগ কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া তার হাঁটুর নিচে ধারাল অস্ত্রের কোপ এবং বাম চোখে আঘাত রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে তার জ্ঞান ফিরেছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে এখন মৃত্যুপথযাত্রী। কিন্তু পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারসহ বিচার চাই।
বাসন থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, কলেজছাত্র ফেরদৌস অপহরণের পর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় শিববাড়ি হলি ল্যাব হাসপাতালের সামনে ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রের মা বাদী হয়ে থানায় রবিন সরদারসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মারামারির মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রবিন সরদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২৮টি মামলা রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন