হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কালনী-কুশিয়ারা নদী থেকে মাছ আহরণ করতে জেলেদের নিকট থেকে মাসিক চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কাকাইলছেও নৌ-পুলিশের বিরুদ্ধে।
চাঁদা ঠিকমতো না দিলে জাল ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ জেলেদের। তারপর সেই জাল ফাঁড়ি থেকে বেশি টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয় তাদের।
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি ফাঁড়ি ইনচার্জের।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার রনিয়া গ্রাম সংলগ্ন কালনী-কুশিয়ারা নদীর তীরে ঘুরতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আর্ধশতাধিক জেলেদের সারিবদ্ধ নৌকা নদীর তীরে নোঙর করা।
এসময় জেলেদের নৌকার ছবি তোলার সময় অনু দাস (ছদ্মনাম) নামে এক জেলে বলেন, ‘খাজনা নেওয়ার লাগি আইছেন?’ কিসের খাজনা জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, ‘আমি মনে করছিলাম পুলিশ। হেরা আইলে আমরা তো মাসে মাসে হেরারে নৌকা প্রতি ২০০ ট্যাকা কইরা মাসোহারা দেই। তাই আমি মনে করছিলাম ট্যাকা নেওয়ার লাগি আইছেন।’
স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, উপজেলার কালনী-কুশিয়ারা নদী থেকে মাছ আহরণ করে প্রতিদিন শত শত জেলে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন। চলতি বছরে নদীতে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। সারাদিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নদী থেকে যে পরিমাণ মাছ আহরণ করা হয় তা বিক্রি করে সংসারে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তার উপর আবার নৌ-পুলিশকে দিতে হয় মাসিক চাঁদা।
চাঁদা ঠিকমতো না দিলে জাল ধরে নিয়ে যায়। আবার ধার দেনা করে টাকা এনে জাল ছাড়িয়ে আনতে হয়। তাই অনেক জেলেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
সমিরণ দাস (ছদ্মনাম) নামে বায়োবৃদ্ধ এক জেলে বলেন, নদীতে আগের মত মাছ নেই। মাঝে মধ্যে দু একটা মাছ পাওয়া গেলে তা বিক্রির টাকা দিয়ে তিন বেলা আধাপেট খাবার খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনরকম বেচেঁ আছি। তার উপর কাকাইলছেওয়ের পুলিশ এসে ইলিশ মাছ ধরার অভিযোগে জাল ধরে নিয়ে যায়। আমরা গরিব মানুষ কি আর করমু। তাই প্রতি মাসে জেলে প্রতি ২০০ করে টাকা চাঁদা দিতে হয়। তবে কতোটি জেলের নৌকা আছে তা সঠিক করে বলতে পারেননি তিনি।
কাকাইলছেও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি সবেমাত্র সপ্তাহ ১০ দিন পূর্বে যোগদান করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি নদীতে যাননি। তবে টাকা কারা নিচ্ছে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন