বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে যোগ দিয়ে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা যুবদলের নেতাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার বড়বাড়ি রোডে একটি খোলা মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গালাগাল করেন তিনি। পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির একাংশের আয়োজনে ওই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌরসভার সাবেক কমিশনার (৬ নম্বর ওয়ার্ড) মকবুল হোসেন বলছেন, আজকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, আর এই দিনে প্রোগ্রাম না করে উপজেলা যুবদলের নেতারা সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাসায় দাওয়াত খেতে গেছেন। এ সময় নেতাদের উদ্দেশ করে ধিক্কার জানিয়ে মকবুল হোসেন অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। শুধু তাই নয়, পাকুন্দিয়ার মাটিতে আমরা দলের জন্য যুদ্ধ করতেছি। আর তাদের এই উপজেলায় কোনো মিটিং করতে দেখি নাই। এদের প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছি। তাদের পাকুন্দিয়ার মাটিতে পা রাখতে দেব না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন (ভিপি কামাল) বলেছেন, পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি আজ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রোগ্রাম করছে। বর্তমান আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন কোনো প্রোগ্রামে আমাদের জানান না। উনি না জানিয়ে আলাদা প্রোগ্রামের আয়োজন করেন। অথচ নেতাকর্মীদের বলেন, আমাদের জানানোর জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায় না। উনি আমাদের মোবাইলে প্রোগ্রামের জন্য কোনো ফোন দেননি। যদি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে নাকে খত দিয়ে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা জালাল উদ্দিনকে উদ্দেশ করে ভুয়া বলে চিৎকার করেন। কামাল উদ্দিন আরও বলেন, আমার ৩৭ বছরের রাজনীতি জীবন, বর্তমান আহ্বায়ক বলেছেন আমাকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির রাজনীতি করবেন না। জালাল উদ্দিন পকেট কমিটি গঠন করেছেন। বর্তমান থানা কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের সদস্য করা হয়নি বলেও তার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সুমন বলেন, পাকুন্দিয়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিনের সঙ্গে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগদান করেছি। এসএসসি ৯৩ ব্যাচের আজকে একটি প্রোগ্রাম ছিল সেখানে উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল আলম ছোটন সাবেক রাষ্ট্রপতির নিজ উপজেলা মিঠামইন প্রোগ্রামে যোগদান করেন। সেখানে যোগদানের পর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে চলে আসেন। তাকে উদ্দেশ করে দাওয়াত খাওয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন বলেন, উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে কিছু বলার নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের টেবিল থেকে কমিটির অনুমোদন হয়ে এসেছে। এ বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ থাকে মির্জা আব্বাস সাহেব ও জেলা বিএনপি জবাবদিহি করবে। এই কমিটিতে আমার কোনো হাত নেই। জেলা বিএনপির কর্মসূচির জন্য সর্বশেষ ২৫ জুলাই দাওয়াত দেওয়ার জন্য ফোন করি। সে সময় আমার ফোন দেখেও রিসিভ করেনি। বিষয়টি জানার পর থেকে পরবর্তীতে আর কোনো প্রোগ্রামের জন্য ফোন করি না। বিএনপি আমার বাবার সম্পত্তি না। কমিটিতে থাকলে তাকে নিয়ে প্রোগ্রাম করতে হবে কিন্তু যদি নিজ থেকে দূরে সরে যায় তাহলে আর কি করা যাবে।
মন্তব্য করুন