মাইলেজ জটিলতা নিরসনে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের (ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিটি) পক্ষ থেকে কর্মবিরতির যে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল তা শেষ হচ্ছে আজ রোববার (২৭ আগস্ট) রাত ১২ টায়। তবে এ ইস্যুতে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে ফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রানিং স্টাফরা।
তাদের দাবি আদায় না হলে ঘোষণা অনুযায়ী কর্মবিরতি শুরু হবে বলে জানান রানিং স্টাফরা। এতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থাকার বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছেন রানিং স্টাফরা।
শনিবারের (২৬ আগস্ট) বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই রেলওয়ের রানিং স্টাফদের ১৬০ বছরের সুযোগ-সুবিধা একটি কালো চিঠির মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের ঘাপটি মেরে রাখা জামায়াত-শিবিরের লোকজন পরিস্থিতি বিগড়ে দিতে এসব কাজ করছে। রোববারের মধ্যে মাইলেজ জটিলতার নিরসন না হলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১২টা ১ মিনিট থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রানিং স্টাফরা জানান, এ নিয়ে ঢাকায় গত বুধবার (২৩ আগস্ট) রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সাথে বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসা হয়নি। বৈঠকে দাবি আদায় নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মো. মজিবুর রহমান ভূইয়া। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় সেখান থেকে উঠে চলে যান রেলমন্ত্রী।
কালবেলার হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। বিভিন্ন জটিলতার কারণে বিষয়টি মীমাংসায় আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় চান তিনি। কিন্তু ১৬০ বছরের মাইলেজের দাবিতে বেশ কয়েকবার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখা হয়নি বলে জানায় রানিং স্টাফ সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান।
এসময় দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন রানিং স্টাফ সমিতির নেতা মজিবুর রহমানকে সংযত হওয়ার অনুরোধ জানান। শেষে বৈঠক থেকে উঠে চলে যান রেলমন্ত্রী।
অন্যদিকে রেলওয়েতে কর্মরত অস্থায়ী শ্রমিকদের (টিএলআর) স্থায়ীকরণের জন্য আগামী ২৮ আগস্টের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে ২৯ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। কেন্দ্রীয় শ্রমিক প্রতিনিধি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমরা সরকারি গেজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে চাকরী স্থায়ীকরণ চাই। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ীকরণের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২৯ আগস্ট থেকে আমরা কর্মবিরতি পালন করবো।
মন্তব্য করুন